Quantcast
Channel: NSSB
Viewing all 364 articles
Browse latest View live

‘অপয়া’ চেরনোবিল এখন বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য- চেরনোবিল বিপর্যয়ের ৩০ বছর আজ

$
0
0


26 April, 2016:

চেরনোবিল-

সোভিয়েত যুগের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক কেন্দ্র। সোভিয়েত সেনাবাহিনীর শৌর্য বীর্যের প্রাণ কেন্দ্র- রুশবিরোধীদের ভয় বাড়ানোর পরীক্ষা ভূমি। কত হাঁকডাক ছিল সেসময় এ চেরনোবিলের। উচ্চাকাক্সক্ষী শিক্ষিতদের চারণভূমি হয়ে উঠেছিল চেরনোবিল। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল রাত ১টা ২৪ মিনিটের সেই ভয়ংকর বিস্ফোরণ সব পাল্টে দিল। ‘সভ্যনগরী’ চেরনোবিল হয়ে উঠল ‘পোড়াভূমি’। ভয়াল সেই বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে প্রথম ছয় মাসেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ছয় লাখ শিশু। বাধ্য হয়ে বসতি গুটিয়ে নিয়েছেন সেসব উচ্চাকাক্সক্ষী বসতিরা। সেই ঘটনার পর থেকেই চেরনোবিলকে ‘অপয়া ভূমি’ নামে অভিসম্পাত করে স্থানীয় রুশরা। ‘অপয়া ভূমি’ এখন সম্পূর্ণই জনমানবশূন্য একটি এলাকা। বাতাসে মিশে যাওয়া বিষাক্ত তেজস্ক্রিয়তায় দীর্ঘ ৩০ বছর ধরেই সেখানে কোনো মানুষ বসবাস করার সাহস করেননি। মানুষ না থাকায়, এক সময়ের লোকালয় এখন পশুপাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়ে গেছে। বড় প্রাণীর মধ্যে নেকড়ে, ভালুক ও ঘোড়া তাদের বসতবাড়ি বানিয়েছে চেরনোবিলে। তবে সেখানে থাকা প্রাণীগুলোর স্বাস্থ্য সম্পর্কে পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা কি ধরনের তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত বা ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রাণীর সংখ্যাও জানা যায়নি। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তেজস্ক্রিয়তার ঝুঁকির চেয়ে মানুষের উপস্থিতিই প্রাণীর জন্য হুমকির কারণ। লেন্সেস্টারের সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ প্রফেসর নিক বেরেসফোর্ড ব্রিটেনের পত্রিকা টেলিগ্রাফকে বলেন, সার্বিকভাবে আমরা বলতে পারি এই বিপর্যয়টির ভালো দিকই বেশি। রেডিয়েশনের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। কিন্তু মানুষ থাকলে অযথাই চারদিকের পশুপাখিকে গুলি করে এবং প্রাণীরা তাদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হারায়। এলাকার নতুন করে ফেরত আসা মারিয়া লজবিন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, এখানে কোনো রেডিয়েশন নেই। আমি কোনো কিছুতেই ভীত নই। যখন আমার মৃত্যুর বয়স হবে, এটা রেডিয়েশনে হবে না। কর্তৃপক্ষ ফেরত আসা কিছু নাগরিককে থাকার অনুমতি দিলেও ইউ ল্যাবরেটরির প্রধান লিওনিড বগদান বিষয়টিতে দ্বিমত পোষণ করেছেন। বগদান চেরনোবিলে পর্যবেক্ষক দলের প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে পারি ৩ স্কয়ার জমির রেডিওএক্টিভ কতটা ভয়াবহ। এর চেয়ে বড় জায়গার পরিবর্তন নানা ধরনের হবে। আজকে যে খাদ্য তেজস্ক্রিয় মুক্ত কালকে একই জমিতে তা তেজস্ক্রিয় যুক্ত থাকবে।’ *চেরনোবিল* *বসবাসের* *উপযোগী* *হতে* *২০* *হাজার* *বছর* *লাগবে** :* পারমাণবিক দুর্ঘটনায় বিপর্যস্ত চেরনোবিলের পরিবেশ স্বাভাবিক হতে অন্তত ২০ হাজার বছর সময় লেগে যাবে। ৩০ বছর আগের ওই বিপর্যয়ের পর সেখানে আর মানুষ বসবাস করতে পারে না। বাতাসে ছড়িয়ে পড়া ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় পদার্থ শোধন হয়ে বিশুদ্ধ আবহাওয়া পেতে ৩ থেকে ২০ হাজার বছর অপেক্ষা করতে হবে। পরিবেশবাদী সংস্থা তাদের এক গবেষণায় এসব কথা জানিয়েছে। সোমবার এ খবর দিয়েছে দ্য ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর। ১৯৮৬ সালের ২৬ এপ্রিল চেরনোবিলের পারমাণবিক কেন্দ্রের বিস্ফোরণে বেলারুশ, ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গায় তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যের থেকেও বড় এলাকা দূষিত হয়ে যায় এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পারমাণবিক দুর্ঘটনার সবচেয়ে ভয়াবহ এই ঘটনার পর ২ লাখ ২০ হাজার মানুষকে ওই এলাকা থেকে স্থায়ীভাবে সরিয়ে নেয়া হয়। ৪ হাজার ৪৪০ বর্গকিলোমিটার কৃষিভূমি এবং ৬ হাজার ৮২০ বর্গকিলোমিটার বনভূমি বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়। বেলারুশ ও ইউক্রেনের ৫০ লাখ মানুষ এখনও তেজস্ক্রিয়তার মধ্যেই বসবাস করছেন বলে জানা যায়। তেজস্ক্রিয় গবেষক ইবনে হ্যারেল ও জেমস মারসন টাইমস ম্যাগাজিনে লেখা বিশ্লেষণে জানান, ওই পারমাণবিক দুর্ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া আইসোটোপগুলো দশ হাজার বছরের অধিক সময় ধরে সক্রিয় থাকবে। কয়েক প্রজন্ম ধরে ‘ক্লিনআপ’ অভিযান চালানোর পরেও এটি সম্পূর্ণ তেজস্ক্রিয়তামুক্ত করা সম্ভব হবে না। তবে কবে নাগাদ চেরনোবিলের ওই জায়গাগুলোতে আবারও জনবসতি স্থাপন করা যাবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে চেরনোবিল পাওয়ার প্লান্টের পরিচালক ইহোর গ্রামোতকিন বলেন, ‘অন্তত ২০ হাজার বছর পর জনবসতির অনুমতি দেয়া সম্ভব।’ কিন্তু পরমাণু বিশেষজ্ঞরা সম্প্রতি জায়গাটি দূষণমুক্ত করতে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং ৩ হাজার বছরের মধ্যেই পুনরায় জায়গাটি দূষণমুক্ত হবে বলে তাদের আশা। এদিকে দূর্ঘটনার স্থলের ১০০০ বর্গ মাইল এলাকায় উচ্চমাত্রার তেজস্ক্রিয় বিকিরণের পরেও পশুপাখিরা ভালোভাবেই বেঁচে আছে এখন এবং জনবসতি তুলে দেয়ার ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। পরিবেশ বিজ্ঞানী জিম স্মিথ বলেন, ‘দুর্ঘটনার আগের তুলনায় এখন ক্রমেই জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বেড়েই চলেছে চেরনোবিলে।’

Source: www.jugantor.com/ten-horizon/2016/04/26/27772

Photo Source: www.dw.com

The post ‘অপয়া’ চেরনোবিল এখন বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য- চেরনোবিল বিপর্যয়ের ৩০ বছর আজ appeared first on NSSB.


বিয়েতে ১০ হাজার গাছ চাইলেন কনে!

$
0
0


26 April, 2016:

প্রায় অর্ধেক দেশ খরার কবলে। পানির কষ্টে রয়েছে প্রতি ৪ জনের ১ জন মানুষ। খরায় ভারতের যুবসমাজের মধ্যে কতটা প্রভাব পড়েছে তা বোঝা গেল মধ্যপ্রদেশের ভিন্ন জেলার প্রিয়াংকা ভাদোরিয়ার মনোভাবে। বিয়েতে কী উপহার চাই জানতে চেয়েছিলেন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাতে প্রিয়াংকা জানায়, ১০ হাজার গাছ লাগাতে হবে। ২২ এপ্রিল আর্থ ডে হিসেবে পালিত হয়েছে। সে দিনই বিয়ে ঠিক হয় ২২ বছর বয়সি প্রিয়াংকার। আর পরিবেশ সচেতন মানুষ হিসেবে বিশ্বকে কিছু ফিরিয়ে দিতেই প্রিয়াংকা এমন উপহার চাইলেন যাতে গোটা দেশ উপকৃত হয়। গোয়ালিয়র-চম্বল অঞ্চলে এটা একটা রীতি। বিয়ের আগে পাত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তার কোন উপহার চাই। সাধারণত এটা জিজ্ঞাসা করেন পাত্র নিজেই। সেদিনও এ কথাই জানতে চান পাত্র রবি চৌহান। তাতে প্রিয়াংকা জানান তার মনের ইচ্ছা। সাধারণ এ বয়সের মেয়েরা বিয়ের উপহার হিসেবে যেসব জিনিস চেয়ে থাকেন, তিনি তার ধারকাছ দিয়েও গেলেন না। প্রিয়াংকার কথা শুনে শুধু শ্বশুরবাড়ির লোকজনই নয়, তার নিজের পরিবারও যথেষ্ট বিস্মিত! তবে এতে দুই পরিবারই যথেষ্ট খুশি হয়েছে। প্রিয়াংকা বলেন, ‘১০ বছর বয়স থেকে গাছ লাগানো শুরু করি। এখন তো এটা নেশার মতো হয়ে গেছে। পরিবেশের ওপর যথেষ্ট অত্যাচার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমরা নিজেরা যদি এ নিয়ে না ভাবি, তবে অদূর ভবিষ্যতে এর জন্য সবাইকে ভুগতে হবে। আর্থ ডে’তে যখন আমার বিয়ে ঠিক হল, তখনই ঠিক করি এটাই চাইব।’

Source: www.jugantor.com/last-page/2016/04/26/27724

Photo Source: www.indiatimes.com

The post বিয়েতে ১০ হাজার গাছ চাইলেন কনে! appeared first on NSSB.

সাথি ফসলে ভাগ্যবদল

$
0
0


26 April, 2016.

আনিসুর রহমান, গুরুদাসপুর (নাটোর):

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় রসুনের খেতে বাঙ্গি আর তরমুজ আবাদ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । রসুনের লাভ ছাড়াও বাড়তি এই আবাদ করে বিঘাপ্রতি ২০-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন কৃষক। এলাকায় এটা সাথি ফসল হিসেবে পরিচিত। প্রায় ১০ বছর ধরে অনেকটা বিনা খরচে লাভজনক হওয়ায় এই আবাদের প্রতি কৃষকের আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে। পলশুরা গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক আজিজ সরকার। নিজের জমি নেই। অন্যের তিন বিঘা জমি ইজারা (বর্গা) নিয়ে রসুন চাষ করেছেন। একই সঙ্গে করেছেন বাঙ্গি চাষ। তাঁর ভাষ্যমতে, এ বছর রসুনের ফলন ও দাম ভালো পেয়েছেন। রসুনের লাভ ছাড়াও তিন বিঘায় যে পরিমাণ বাঙ্গি হয়েছে, তা বিক্রি করে কমপক্ষে দেড় লাখ টাকা বাড়তি লাভ করবেন। স্থানীয় কৃষকেরা জানান,বাঙ্গি-তরমুজ চাষ করার জন্য আলাদা করে জমির দরকার হয় না। রসুন চাষের জমিতেই বীজ বপন করতে হয়। রসুন উঠে যাওয়ার পরই বাঙ্গি-তরমুজের গাছ ছড়িয়ে পড়ে খেতে। তখন সামান্য সেচ ও কীটনাশক দিলেই চলে। চৈত্র মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে বাঙ্গি-তরমুজ তুলতে শুরু করেন কৃষক। একদিকে রসুন ঘরে তোলা, অন্যদিকে বাঙ্গির খেত পাহারাসহ জমি থেকে এসব ফসল ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে গুরুদাসপুরের কৃষক ও কৃষকবধূরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রকৃতির উত্তাপে বাঙ্গি আর তরমুজ দ্রুত পেকে যায়। তাই দ্রুত এসব ফসল বিপণনের উদ্যোগ নিতে হয়। ব্যস্ততার এ সময়ে কৃষক পরিবারের স্কুল-কলেজগামী ছেলেমেয়েও ফলন তোলা ও বিপণনে হাত লাগিয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কাঁচা-পাকা সড়ক ও মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠেছে পাইকারি বাঙ্গি বিক্রির মোকাম। বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের পথে পথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাক নিয়ে এসব পাইকারি মোকাম ও কৃষকের খেত থেকে সরাসরি পাইকারি দরে বাঙ্গি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকার ও ফড়িয়ারা। যশোর থেকে আসা মাসুদ পারভেজ নামের একজন ব্যাপারী বলেন, গুণগত মান ও অপেক্ষাকৃত কম দামে বাঙ্গি পাওয়া যায় এখানে। প্রতিদিন গড়ে দুই ট্রাক বাঙ্গি আর তরমুজ কিনে ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিক্রি করেন তিনি। আকারভেদে প্রতিটি বাঙ্গি ২০ থেকে ৩৫ টাকায় আর প্রতিটি তরমুজ ৬০ থেকে ৯০ টাকা দরে কেনেন বলে জানান মাসুদ। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গুরুদাসপুর থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০টি ট্রাক তরমুজ-বাঙ্গি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। প্রতিটি ট্রাকে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার পিস বাঙ্গি লোড করা সম্ভব হয়। এতে ট্রাকপ্রতি প্রায় ৯০ থেকে ১ লাখ টাকার বাঙ্গি নিয়ে যান ব্যাপারীরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, গুরুদাসপুরের কৃষি এবং কৃষকের জন্য সাথি ফসল বাঙ্গি-তরমুজ এক আশীর্বাদ। এই আশীর্বাদই কৃষককে আর্থিকভাবে বদলে দিচ্ছে। অনেকটা বিনা খরচে একই জমিতে বাড়তি আবাদে কৃষকের ভাগ্যবদল শুরু হয়েছে। আগামী দিনে ব্যাপকভাবে তরমুজ-বাঙ্গি চাষ শুরু হবে বলে তিনি মনে করেন। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গুরুদাসপুরে এ বছর সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বিনা চাষে রসুনের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ৩ হাজার ২০০ বিঘা বাঙ্গি আর ৩ হাজার ৯০০ বিঘা জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। তা ছাড়া, এসব জমির আলে ধনিয়া ১৮৫ বিঘা, মেথি ১৫০ বিঘা, কালোজিরা ১৮৫ বিঘা ও মরিচ ১২৫ বিঘা আবাদ হয়।

Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/840820

Photo Source: bonnieplants.com

The post সাথি ফসলে ভাগ্যবদল appeared first on NSSB.

চা এবার আশাজাগানিয়া

$
0
0


26 April, 2016.

শাহ ফখরুজ্জামান, হবিগঞ্জ:

চুনারুঘাট, মাধবপুর, বাহুবল ও নবীগঞ্জ উপজেলার চা বাগানগুলোতে এ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ারও আশা করছেন চা শিল্পে জড়িতরা। মৌসুমের শুরুতেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি আর পোকামাকড়ের উপদ্রব না থাকার পাশাপাশি আমদানি শুল্ক না কমানোয় এ শিল্পে এবার আশার সঞ্চার হয়েছে। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার লস্করপুর ভ্যালিতে চলতি বছর মৌসুমের শুরুতেই রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। বলা যায় মৌসুমজুড়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বিগত বছরগুলোতে এপ্রিলে চা পাতা চয়ন শুরু হতো, সেখানে চলতি বছর মার্চেই পাতা চয়ন ও উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছর ভ্যালিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চা সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবছর মার্চের শেষদিকে নিজস্ব সেচের মাধ্যমে বিভিন্ন চা বাগানে উৎপাদন শুরু হলেও এ বছর প্রাকৃতিকভাবে ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বেশ বৃষ্টি হওয়ায় ১ মার্চ থেকেই ভ্যালির বিভিন্ন চা বাগানে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে। আর এ আগাম উৎপাদনে একদিকে যেমন এ বছর চা বাগানিরা যেমন আশাবাদী, তেমনি আগাম হাজরী (বেতন) পেয়ে খুশি চা শ্রমিকরাও। ভ্যালি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ৩ এপ্রিল ভ্যালিতে ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এর আগে ২৭ মার্চ ৩৫ মিলিমিটার, ১৫ মার্চ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ২২ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে ৯ ও ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত সংরক্ষণ করা হয়। এ ছাড়া ২১ জানুয়ারি ১২ মিলিমিটার, ১২ ফেব্রুয়ারি ১৫ মিলিমিটার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ৫১ মিলিমিটার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সব মিলিয়ে ভ্যালিতে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাগান এলাকায় গেলেই এখন সবার চোখে পড়ে সবুজের সমারোহ। বৃষ্টিতে নতুন প্রাণ পেয়ে সতেজ হয়েছে চা গাছগুলো। মৃদু-মন্দ বাতাসে দুলছে চায়ের সবুজ পাতা। আর এরই মাঝে চা কন্যারা উৎসবের আমেজে পাতা চয়ন করছেন। পাতা চয়নের সময় হাত ভরে পাতা আসছে। শ্রমিকরা দৈনিক নির্ধারিত ২৪ কেজি পাতা তোলার পর প্রত্যেকে অতিরিক্ত ৮-১০ কেজি পাতা বেশি তুলতে পারছেন। এতে শ্রমিকরাও বেশ খুশি। অন্যদিকে কারখানায়ও পুরোদমে চা তৈরির কাজ চলছে। অবশ্য মার্চের প্রথম সপ্তাহে নানা আনুষ্ঠানিকতায় এসব বাগানে চা পাতা চয়ন ও উৎপাদন শুরু হয়েছিল। সাধারণত এপ্রিলে চা পাতা উৎপাদন শুরু হয়। তবে এবার আগাম বৃষ্টির কারণে মার্চের প্রথমেই পাতা উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা শ্রমিকরা বেশ খুশি। উৎপাদন ভালো হলে বাড়তি চা পাতা তোলার ওপর শ্রমিকরা বোনাসও পাবেন। লস্করপুর ভ্যালির চেয়ারম্যান ও চাকলাপুঞ্জি চা বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক এস নাগ বলেন, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় গত মৌসুমে ভ্যালিতে এক কোটি কেজি বেশি চা উৎপাদিত হয়েছে। এ বছরও আগাম উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে চলতি বছরও চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। দেউন্দি চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক দেবাশীষ বলেন, ‘বছরের শুরুতেই আমরা বৃষ্টি পেয়েছি। চৈত্রের খরাকে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু সময়মতো প্রয়োজনীয় বৃষ্টির কারণে তা কাটিয়ে ওঠা সহজ হয়েছে। যে কারণে এবার উৎপাদন বাড়বে।’ চণ্ডিছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর আগাম বৃষ্টির কারণে নতুন পাতার চায়ের গুণগত মান বেশ ভালো হচ্ছে। ধারাবাহিক বৃষ্টি হলে গত বছরের মতো এবারও চায়ের গড় উৎপাদন বাড়বে। চান্দপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক শামীম হুদা জানান, তাঁর বাগানের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ১২ লাখ কেজি। আগাম মৌসুম শুরু হওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা সহজেই অর্জন করা সম্ভব হবে। গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর পুরো ভ্যালিতেই ভালো উৎপাদন হবে। তেলিয়াপড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক এমদাদুল হক বলেন, অন্যান্য বছর এ সময়ে তাঁর বাগানে ২০-৩০ হাজার কেজি সবুজ পাতা সংগ্রহ হতো। এ বছর এর পরিমাণ এক লাখ ২৫ হাজার কেজি। এ মৌসুমে বাম্পার ফলন প্রত্যাশা করে তিনি জানান, তাঁর বাগানে প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ হয় ১৬২ টাকা। তাঁর প্রত্যাশা, অকশনে এবার ১৮০ টাকার বেশি বিক্রি হবে। মৌসুমের প্রথম দিকে চায়ের দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় চায়ের মানও এবার ভালো হবে। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মাঈনউদ্দিন জানান, প্রতিবছর অধিক খড়ার জন্য লাল মাকড়শার আক্রমণের শিকার হয়ে পাতায় এক ধরনের হলুদ রোগ দেখা দিত। এ বছর আগাম বৃষ্টিতে এ ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। ফলে সব বাগানেই ভালো ফলন হবে। লস্করপুর ভ্যালিতে রয়েছে ২২টি চা বাগান। এর বাইরেও কয়েকটি বাগান রয়েছে। গত কয়েক মৌসুমে খড়া, শ্রমিক অসন্তোষ ও পোকামাকড়ের আক্রমণে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক বছর আগে আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে দেশীয় চা শিল্প হুমকির মুখে পড়ে। কিন্তু এ বছর অনুকূল পরিবেশের পাশাপাশি আমদানি শুল্ক না কমানোয় এ শিল্পে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

Source: www.kalerkantho.com/print-edition/priyo-desh/2016/04/26/351626

Photo Source: tunza.eco-generation.org

The post চা এবার আশাজাগানিয়া appeared first on NSSB.

ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা বছর-দক্ষিণ ঢাকায় সবার হাতের নাগালেই ডাস্টবিন

$
0
0


26 April, 2016.

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বসানোর কাজ শুরু করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সালকে পরিচ্ছন্নতার বছর ঘোষণা করে ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে এ ধরনের পাঁচ হাজার ৭০০ ডাস্টবিন বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে গতকাল সোমবার পর্যন্ত এক হাজার ৫১৭টি ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। ডিএসসিসি সূত্র জানায় এরই মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০টি, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০টি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০টি, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৮৯টি, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৫টি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৭০টি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০টি, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩২টি, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০টি, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২০টি, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৫০টি, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৭টি, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১০০টি, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ১৮১টি, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪০টি, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৪টি ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪টি ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পুরো পাঁচ হাজার ৭০০টি ডাস্টবিন বসানোর কাজ শেষ হবে। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) খান মোহাম্মদ বিলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা একটি পরিছন্ন নগরী গড়তে কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় পাঁচ হাজার ৭০০ ডাস্টবিন বসানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আরো ডাস্টবিন বসানো হবে। এখন হাসপাতাল, বাস, লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হাত বাড়ালেই ময়লা ফেলার ডাস্টবিন পাওয়া যাবে।’

Source: www.kalerkantho.com/print-edition/news/2016/04/26/351594

Photo Source: www.kalerkantho.com/print-edition/news/2016/04/26/351594

The post ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা বছর-দক্ষিণ ঢাকায় সবার হাতের নাগালেই ডাস্টবিন appeared first on NSSB.

মৌসুমি ফলে বিষ!

$
0
0


26 April, 2016.

*আবুল* *খায়ের* *ও* *বারেক* *কায়সার*:

‘মধু কই কই বিষ খাওয়াইলা’ চট্টগ্রামের জনপ্রিয় একটি আঞ্চলিক গান। হালে তরমুজ কেনার ক্ষেত্রে এই গানটি বেশ মিলে যায়। দোকানির কাছ থেকে বেশ ঢাউশ সাইজের তরমুজ কিনে হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন ক্রেতা। কিন্তু বাসায় ফিরে তরমুজ কেটে মুখে দিতেই মাথায় বাড়ি। মুখে দিতেই বোঝা গেল রসালো এই ফলটি বিষে ভরা। শুধু তরমুজ নয় মৌসুমি প্রায় সব ফলই এখন বিষে ভরা। বাজারে এখন কেমিক্যাল মিশ্রিত ফলই বেশি। অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে কৃত্রিম উপায়ে ফল পাকাচ্ছে। কাজটি এমন কৌশলে করা হয় যাতে ক্রেতারা বুঝতে না পারে। রাসায়নিক মেশানোর পর একদিনের মধ্যে ফল পেকে যায়। কোনোটার রঙ হয় গাঢ় হলুদ, কোনোটা আবার টকটকে লাল। বিক্রির জন্য তাকে তাকে সাজিয়ে রাখা হয় দোকানে। জিভে জল আসার মত এই ফল দেখেই আকৃষ্ট হন ক্রেতারা। ফল ভেবে বিষ কিনে নিয়ে যান প্রিয়জনের জন্য। আম, কলা, পেঁপে, তরমুজসহ বেশিরভাগ ফলেই কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে। সাধারণত উত্পাদন প্রক্রিয়ার শুরু হতে ভোক্তার হাতে পৌঁছানো অবধি নানা পর্যায়ে জেনে না জেনে পোকা দমন, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ফল পাকানো এবং সংরক্ষণের জন্য প্রাণঘাতী রাসায়নিক ব্যবহূত হয়। অপরিপক্ব ফলে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইড মিশিয়ে তা দ্রুত পাকানো হয়। দ্রুত পচন ঠেকাতেও কেমিক্যাল মেশানো হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন যেসব ফল বাজারজাত করা হয়, তার ৯০ শতাংশই বিষে ভরা। অধিক মুনাফা লাভের আশায় অসাধু ফল ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর ধরে এই অপকর্ম চালিয়ে আসছে। অথচ বিজ্ঞানসম্মত স্বাস্থ্যসম্মত উপায়েই ফল সংরক্ষণ করা যায়। এই বিষয়ে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত বলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা জানান। চিকিত্সা বিজ্ঞানী, খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো ফল খাইয়ে ক্রমেই মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্সের অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম বলেন, বিষাক্ত ফল খেলে প্রাথমিক পর্যায়ে জন্ডিস, পেট ব্যথা, বমি হওয়া, ডায়রিয়া, বুক জ্বালা-পোড়াসহ শরীরে বিভিন্ন প্রদাহ হতে পারে। পরে লিভারে জটিল রোগ, কিডনি সমস্যা, পাকস্থলী ও অন্ত্রে ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বলেন, বিষাক্ত রাসায়নিক দিয়ে কৃত্রিমভাবে ফল পাকানোর কারণে ফলের পুষ্টিগুণ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। ভিটামিন নষ্ট হয়। ইতোমধ্যে মৌসুমি তরমুজে সয়লাব হয়ে গেছে রাজধানীর প্রতিটি ফুটপাত, বাজার থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জের হাট-বাজার। পাইকারি, খুচরা ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা চুটিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। শহরে ভ্যানে করে ?অলিতে-গলিতেও তরমুজ বিক্রি করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তবে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরাই মূলত রাতের আঁধারে আড়তেই তরমুজের বোটায় পুশ করছেন এক ধরনের বিষাক্ত রঙিন কেমিক্যাল। এদিকে গত ১০ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলার পৌর এলাকায় তরমুজ খেয়ে ফাহিম (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ফাহিমের পরিবারের আরো পাঁচ সদস্য। ফাহিম পৌর এলাকার চরকাগমারা গ্রামের বাবু মিয়ার ছেলে। জানা গেছে, ঘটনার দিন মোমিন বাজার থেকে একটি তরমুজ কিনে বাড়িতে নিয়ে যান বাবু মিয়া। সেই তরমুজটি পরিবারের সবাই মিলে এক সঙ্গে খান তারা। এর পরপরই শিশু ফাহিমসহ ছয়জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে ফাহিমের মৃত্যু হয়। শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মনজুর হোসেন বলেন, অসময়ে বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো ফল খেলে শিশুদের বমি, জন্ডিস, পেটের পীড়া হতে পারে। গর্ভবতী মায়েদেরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। শিশুর ক্যান্সার, বিকলাঙ্গ এবং হাবাগোবা হওয়ার মতো জটিল রোগও হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছে। শিশুরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এসবের পেছনে বিষযুক্ত খাবারের প্রভাব রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আকরাম হোসাইন বলেন, বিষে ভরা ফল খেলে শিশুদের লিউকোমিয়া, লিমপোমাসহ লিভার, কিডনি ও পাকস্থলিতে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এদিকে মৌসুমি ফল বিষমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। সংগঠনের পক্ষ থেকে গত শুক্রবার বলা হয়, কয়েকদিনের মধ্যেই বাজারে আম, লিচু, জাম, আনারস, কাঁঠালসহ নানা সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক ফল বাজারে আসতে শুরু করবে। কিন্তু নিরাপদ মৌসুমি ফল পাওয়া নিয়ে জনমনে শঙ্কা কাটছে না। কারণ গত কয়েক বছর মৌসুমি ফল উত্পাদনে ব্যাপকভাবে বিষের ব্যবহার হয়েছে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক পরিচালক ড. ফরমুজুল হক বলেন, মৌসুমি ফলের মাসে আমরা সন্তানদের ফল খাওয়াতে শঙ্কিত হচ্ছি। ফল উত্পাদন থেকে শুরু করে বাজারে আসা পর্যন্ত যত পর্যায়ে কীটনাশক মেশানো হয় সবগুলো পর্যায়ে তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। পবা খাদ্যে ভেজাল বন্ধে ১০টি সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো- কৃষি উত্পাদন থেকে জোগানের প্রতিটি ধাপে পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। খাদ্যে ক্ষতিকর সব ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার বন্ধ ও নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এবং ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৫ দ্রুত বাস্তবায়ন। প্রতিটি জেলায় খাদ্য আদালত স্থাপন। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক খাদ্য পর্যবেক্ষক নিয়োগ ও কৃষি আদালত গঠন। নিষিদ্ধ রাসায়নিক পদার্থের আমদানিকারক ও ব্যবহারকারী এবং লেবেল ছাড়া কীটনাশক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। সময়োপযোগী কীটনাশক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন। দেশের চাহিদা অনুযায়ী টিসিবির মাধ্যমে ফরমালিন আমদানি। খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণে বাজার পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা জোরদারকরণ এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ। দেশে জৈব কৃষি ব্যবস্থার প্রচলন ও একে জনপ্রিয় করে তোলা।

Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/first-page/2016/04/26/116274

Photo Source: www.beextrahealthynow.com

The post মৌসুমি ফলে বিষ! appeared first on NSSB.

ঝিনাইগাতীতে হাতির তাণ্ডব

$
0
0


26 April, 2016.

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি:

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় গারো পাহাড়ের ঢালে দুটি ইউনিয়নের ১২টি গ্রামে প্রতি রাতেই তাণ্ডব চালাচ্ছে বন্য হাতির পাল। খাবারের সন্ধানে এরা লোকালয়ে হানা দিয়ে নষ্ট করছে ফসলি জমি। গুঁড়িয়ে দিচ্ছে বসতঘর ও গাছপালা। ২ এপ্রিল কাংশা ইউনিয়নের নকশী গারোপাড়ায় হাতির আক্রমণে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পাহাড়ের ঢালে ১ হাজার ৮০০ পরিবারের প্রায় আট হাজার লোক হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। উপজেলা প্রশাসন ও কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, ২ এপ্রিল সকালে ৩০-৪০টি হাতি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত দিয়ে ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের লোকালয়ে নেমে আসে। সকাল আটটার দিকে নকশী গ্রামে হাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এরপর থেকে প্রতি রাতে বন্য হাতির পাল উপজেলার কাংশা ও নলকুড়া ইউনিয়নের তাওয়াকুচা, পানবর, গরুচরণ দুধনই, বাকাকুড়া, গান্দিগাঁও, হালচাটি, নকশী, রাংটিয়া, সন্ধ্যাকুড়া, গোমড়া, হলদীগ্রাম ও গজনী গ্রামে হানা দেয়। হাতির পাল গ্রামে ঢুকে বোরো ফসল খেয়ে নষ্ট করা ছাড়াও বসতবাড়ি, গাছপালা ভেঙে ফেলছে। গত এক সপ্তাহে হাতির পাল সাতটি বসতঘর ভেঙে ফেলেছে এবং প্রায় ৩০ একর জমির ধান নষ্ট করেছে। ৪ এপ্রিল সরেজমিনে কাংশা ইউনিয়নের নওকুচি গারোপাড়ার কয়েকজন আদিবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫-১৬ বছর ধরে প্রতিবছর ধান ও কাঁঠাল পাকার সময় তাঁরা হাতি- আতঙ্কে থাকেন। এ সময় হাতির পাল পাহাড় থেকে লোকালয়ে হানা দেয়। এ পর্যন্ত হাতির আক্রমণে উপজেলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক লোক। জীবন বাঁচাতে তাঁরা প্রতি রাতে দল বেঁধে মশাল জ্বালিয়ে পাহারা বসাচ্ছেন। গারোপাড়ার লতিরং মারাক বলেন, ‘কী করমু, মামাগর (হাতি) ভয়ে থাহি, কহন জানি আইসা পড়ে। তাই সবাই মিইলা সন্ধ্যার পর মশাল লইয়া পাহারা দেই। আমগর গেরামের সবায় ভয়ের মধ্যে আছি। মশাল জ্বালাইতে সরকারিভাবে তেলের ব্যবস্থা করলে আমরা কিছুটা রক্ষা পাইতাম। সবাই রাইত জাগুনের ফলে দিনে কামকাইজও করবার পায় না।’ নওকুচি গ্রামের চপিনার্থ মারাক বলেন, ‘হাতির পাল দিনে গাজনীর জঙ্গলে থাহে। সইন্ধ্যা নামুনের লগে লগে গাছপালা মটমট কইরা ভাঙতে ভাঙতে গেরামে ঢুইকা পড়ে। শব্দ পাইয়া মশাল জ্বালাই, হইচই করি, ঢাকঢোল পিডাই, তাও হাতি সরে না। আমরা ভয়ে সারা রাইত জাইগা থাহি। আলো দেখলে হাতি কিছুডা ভয় পায়। সরকারিভাবে পাহাড়ি গ্রামে যদি পল্লী বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হতো, তাইলে আমগর বিরাট উপকার অইত।’ কাংশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুর রউফ বলেন, ‘প্রতি রাতেই হাতির পাল হানা দেয়। আমার ইউনিয়নে পাহাড়ের ঢালে এক হাজার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। হাতি তাড়াতে আমি নিজেও গিয়েছি। তবে সরকারিভাবে মশাল জ্বালাতে তেলের ব্যবস্থা হলে এলাকাবাসীর হাতি তাড়াতে সুবিধা হতো।’ নলকুড়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে প্রায় ৮০০ পরিবার হাতি-আতঙ্কে রয়েছে। বর্তমানে হাতির দলটি গজনী পাহাড়ে অবস্থান করছে। সন্ধ্যা হলেই লোকালয়ে হানা দেয়। সরকারি বা বেসরকারিভাবে জেনারেটরের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা হলে হাতি লোকালয়ে আসতে ভয় পেত। এ রকম আলোর ব্যবস্থা করা গেলে গ্রামের বাসিন্দাদের আর নির্ঘুমে রাত কাটাতে হতো না।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘হাতি-আতঙ্কে থাকা সীমান্তবর্তী প্রতিটি পরিবারকে অধিক আলো দিতে সক্ষম এমন বাতি (চার্জলাইট) দেওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। আশা করছি, তা দ্রুত বিতরণ করা হবে। আপাতত মশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়াতে তাঁদের কেরোসিন দেওয়া হবে।’

Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/840952

Photo Source: www.michaeljournal.org

The post ঝিনাইগাতীতে হাতির তাণ্ডব appeared first on NSSB.

হরেক রকম কচু

$
0
0
Elephant Ear Taro

ফুল সহ কচু গাছ

বেটাকে এমন কচু দিয়েছি টের পাবে আজ। পাঠক একটু বিভ্রান্তিতে পড়ে গেলেন তাইনা? ধরুন আপনি একটি কাজ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন কিন্তু যথাসময়ে কাজটি না করে যিনি আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার সামনে উপস্থিত হলে প্রথমেই যা শুনতে হয় “কাজটি করেননি কেন?” “তাহলে কি কচু করেছেন”। আমার এক প্রয়াত শিক্ষক(সর্বজন শ্রদ্বেয়) ক্লাসে পড়া জিজ্ঞেস করলে উত্তর না দিতে পারলে বৃদ্বাংগুলি দেখিয়ে বলতেন বাসায় কি কচু করেছো। আর উত্তর ভুল হলে আরো রেগে যেতেন তখন তিনি ৩ বার বলতেন কচু শিখেছো,কচু শিখেছো এবং কচু শিখেছো। সুধী পাঠক যদি কাউকে বলা হয় “বেটা তুই একটা কচু”। একটু ভেবে দেখুন অবস্থা কি হবে(!) থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়াতে পারে। কথায় কথায় কচু শব্দটি অনেক তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ব্যবহার করা হয়। এই কচুর এত গুনাগুন তারপরেও কেন কচু শব্দটিকে ব্যাঙ্গাত্বক ভাবে ব্যবহার করা হয় আমার জানা নেই। কচু দিয়ে ইলিশ রান্না করলে আপনি আমি খুশি হয়ে যাই কিন্তু যখনই কচু শব্দটি আপনাকে আমাকে উদ্দেশ্য করে ব্যবহার করা হয় তখন আমরা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠি। কারন হিসেবে এর ব্যখ্যা আমার জানা নেই। তবে কবি গুরু কচুকে বিশেষ সম্মান দিয়ে কবিতা রচনা করতে ভুল করেননি।

Elephant Ear Taro1

মান কচু

“অধিকার বেশি কার বনের উপর
সেই তর্কে বেলা হল, বাজিল দুপর।
বকুল কহিল, শুন বান্ধব-সকল,
গন্ধে আমি সর্ব বন করেছি দখল।
পলাশ কহিল শুনি মস্তক নাড়িয়া,
বর্ণে আমি দিগ্‌বিদিক রেখেছি কাড়িয়া।
গোলাপ রাঙিয়া উঠি করিল জবাব,
গন্ধে ও শোভায় বনে আমারি প্রভাব।
কচু কহে,গন্ধ শোভা নিয়ে খাও ধুয়ে,
হেথা আমি অধিকার গাড়িয়াছি ভুঁয়ে।
মাটির ভিতরে তার দখল প্রচুর,
প্রত্যক্ষ প্রমাণে জিত হইল কচুর।”

সুধী পাঠক “বাংলার আগাছা পরিচিতি” নামক বইতেও কচুকে তুচ্ছ করে আগাছা হিসেবে দেখানো হয়েছে। যা হোক রাস্তায় এই তুচ্ছ মানকচুর(কোন কোন এলাকায় ফেনকচু বলে) সাথে দেখা তাকে নিয়ে লিখবো কিন্তু তার আগে বাংলাদেশে কি কি প্রকারের কচু পাওয়া যায় একটু দেখে নেই।
বাংলাদেশে অনেক রকমের কচু পাওয়া যায় যেমন –

১.বন কচু।
২.বিষ কচু।
৩.কাঁটা কচু।
৪.মুখী কচু।
৫.শোলা কচু।
৬.ওল কচু।
৭.মান কচু।
৮.মোকাদ্দম কচু।
৯. সাল কচু।
১০. দুধ কচু।
১১. ঘেঁটু কচু।
১২. রক্ত কচু।
১৩. পঞ্চমুখী কচু
১৪. মৌলবী কচু।
১৫.গাঢ় কচু ও
১৬.ছাতি কচু ইত্যাদি।
মান কচু বহুবর্ষজীবি সপুস্পক একবীজপত্রি উদ্ভিদ। ইংরেজীতে একে Giant Taro বা Elephant Ear Taro বলা হয়। এর গুনগত মান অন্য কচুর চেয়ে ভাল এতে গলা চুলকানোর পরিমান অন্য কচুর তুলনায় কম খেতেও স্বুস্বাদু তাই হয়ত একে মান কচু নামকরন করা হয়। এর পাতার আকৃতির কারনে একে ইংরেজীতে হাতির কান নামকরন করা হয়েছে। বর্ষাকালে এই কচুর পাতা গ্রামাঞ্চলে ছাতি হিসেবে ব্যবহ্নত হতো বিধায় কোন কোন অঞ্চলে একে ছাতি কচু বলে। মানকচুর ডাটা অনেক মোটা হয় যা কেটে নিলে ফেনার মত লেটেক্স বের হয় আর এ কারনেই অনেকে একে ফেন কচু বলেন। সাধারণত কচু গাছ হয় বাড়ির আশে পাশে, রাস্তার ধারে, স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় বেশীর ভাগই লাগাতে হয় না এমনিতেই জন্মে। আমাদের দেশে শাক হিসাবে কচুর প্রচলন বহু আগে থেকে। মানকচু আমাদের দেশে চাষ করা হয়। সুইডিস উদ্ভিদ বিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস এই কচুকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেননি তিনি অতী যত্নে এর শ্রেনিবিন্যাস করেছেন ও দ্বিপদ নামকরন করেছেন।
Family:Araceae
Genus:Alocasia
Species:A. macrorrhizos
Botanical name: Alocasia macrorrhizos L
আমরা সকলেই জানি কচুতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ আছে। কচু খেলে শরীরে রক্ত হয়। প্রেগনেন্ট মহিলাদেরকে কচুশাক খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় কারন কচুশাক থেকে প্রাপ্ত আয়রন Fetus এর cognitive functions কে উন্নীত করনে সাহায্য করে।
কচু শাক সব মৌসুমেই পাওয়া যায়। শরীরে রস বাত হলে,রাতকানা ও Stomatitis এ কচু শাক খুবই উপকারী। কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে “ভিটামিন এ” থাকায় রাতকানা রোগ প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত উপকারী। কচু আঁশ জাতীয় হওয়ায় এটি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর করে।কচুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড় শক্ত করতে সহায়তা করে।চুলের ভঙ্গুরতা বন্ধেও কচুর উপকারিতা অনেক।কচুতে আয়োডিনের পরিমাণও অনেক।যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি রয়েছে তাদের জন্য কচু অনেক উপকারী।কচুর লতিতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন এটি।
কচুর এত গুণাগুণ। সুধী পাঠক আসুন আমরা একত্রে বলি

বেশী করে কচু খাও
যদি আয়রনের ঘাটতি মেটাতে চাও।
ভিটামিন “এ” এর ঘাটতি হলে
কচুশাক খাবারের ম্যানুতে রাখলেই চলে।

পরিশেষে একটি গল্প বলে শেষ করছি। আমি তখন দশম শ্রেনীর ছাত্র। আমার বাবার বন্ধু আঃ জব্বার স্যার Jonathan Swift এর লেখা Gulliver’s Travels পড়াতেন। একদিন ক্লাসে হোম ওয়ার্ক ছিলো Gulliver এর চাইল্ডহুড মুখস্ত করা। স্যার ছিলেন রাসভারী মানুষ। যথারিতি মুখস্ত পড়া ধরছেন তাও আবার স্টেজের উপর দাঁড়িয়ে বলতে হয়। একে একে আমার পালা আসলো কিন্তু সমস্যা হলো আমার মুখস্ত হয়নি তাও ধুরু ধুরু বুকে স্টেজে উঠলাম বলা শুরু করলাম Gulliver the third of five sons of his parents…….। তারপর আর মনে নেই এমন সময় দেখলাম স্যার বই খুলে মিলিয়ে নিচ্ছেন আমি কি বলছি। যেহেতু আমি স্যারের চেয়ারের পাশেই দাঁড়িয়ে বলছি সুতরাং বইএর লেখাগুলো স্পস্ট দেখা যাচ্ছিলো আমিও সু্যোগের সৎ ব্যবহার করছি কিন্তু বিধি বাম। আমাদের সহপাঠী ছিলো স্যারের মেয়ে “চায়না”। হঠাৎ সে বলে দিলো আজহার দেখে বলছে। ঠিক তখনই স্যার বই বন্ধ করে বললেন আবার বলো প্রথম থেকে আমি শুরু করলাম Gulliver the third of five sons of his parents…….। যথারিতি আর পারছিনা। স্যার রেগে অগ্নিময় হয়ে বললেন গতকাল বাড়িতে কি কচু করেছো? আমি চুপ। আশে পাশে বেত লাঠি কিছুই নেই দপ্তরী নবীহুসেন ভাইকে ডাকা হলো সেও কিছুই না পেয়ে মান কচুর ডাটা নিয়ে এলো স্যার তাই দিয়ে শুরু করলেন সুধী পাঠক ব্যথা তেমন পাইনি কিন্তু ঘন্টা খানিক পরে টের পেয়েছিলাম যেহেতু কচুতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামক রাসায়নিক পদার্থ থাকে।
টীকাঃ
Taro–Araceae পরিবারভুক্ত উদ্ভিদের বিভিন্ন প্রজাতি কে Taro বলা হয়। এটি হলো সাধারন নাম।
Fetus–বাচ্চা মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাকে Fetus বলে।
Cognitive Functions developments– বুদ্বি মেধা উন্নীত করন।
Stomatitis–মুখগহ্বরে প্রদাহ বা ঘা।

The post হরেক রকম কচু appeared first on NSSB.


বিলুপ্ত প্রায় বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি

$
0
0

Bamboo busket (5)

বাঁশ বা বেতের তৈরী নানাবিধ সামগ্রী আমাদের শিল্প, আমাদের লোকঐতিহ্য l একটা সময় ছিল আমাদের এই লোকসামগ্রী নিত্য দিনের সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত হত l গৃহের আসবাব তৈরিতে যেমন বেতের ব্যবহার ছিল তেমনি ছিল বাঁশ দ্বারা নির্মিত ঝুড়ি , কুলা, মাছ ধরা টোপা এমন হরেক রকমের ব্যবহার ছিল যা আজ বিলুপ্তির পথে l কুটিরশিল্প নামক একটি লোকসংস্থান কোনো এক সময় বেকার যুবক ও মহিলাদের কর্মসংস্থান যোগাতো আর সেখানে এই সমস্ত লোকশিল্পের নির্মান ও বিক্রয় সল্প আয় এর মাধ্যম ছিল l পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো চাকমা সম্প্রদায় বাঁশ ও বেতের নানান সামগ্রী তৈরী করে থাকেন যেমন-হাল্লোং, হক্কেরেং, হুরুম l আমাদের দেশীয় শিল্প হিসেবে তৈরী বাঁশ ও বেতের অন্যান্য সামগ্রী ঝুড়ি, ডালা, কুলা, চাঙ্গারী, মুড়া, ঢুষি, হাতপাখা, চালোন, টোকা, বাঁশি, গোলা, ডোলা, আউড়ি, চাঁচ, ধামা, পাতি, চেয়ার, টেবিল, বই রাখার তাকসহ ঘরের খুটি বেড়া এমনি বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার হয়ে এসেছে ধনী গরিব সকল গৃহেই l অপর্যাপ্ত কাচা মালের যোগান ও উপযুক্ত মূল্যায়নের অভাবের পাশাপাশি প্লাস্টিক সামগ্রীর জনপ্রিয়তায় বিলুপ্তির পথে আমাদের বাঁশ ও বেত শিল্প l
আধুনিকতার ছোয়ায় পরিবর্তন এসেছে আমাদের চাহিদা ও রুচিবোধে l আমাদের আধুনিকতার সাথে পাল্লা দিতে পিছিয়ে পরেছে এই লোকজ সামগ্রী l কেন না আমরাও আমাদের বাঁশ বেতের ঝুড়িকে স্থান করেদেই আধুনিক সজ্জার আবাস ও বাগানে l পাশ্চাত্যে বাঁশ ও বেতের ঝুড়ির বিবিধ ব্যবহার হয়ে থাকে l আমরাও আমাদের দেশীয় উপাদানে প্রস্তুত ঝুড়িকে নতুন আঙ্গিকে ব্যবহার করতে শিখি এবং ফিরিয়ে ানী এই শিল্প l প্রশ্ন থেকে যায় কিভাবে সম্ভব? ঘর সাজাতে ফুল গাছ সহ টবখানা একটি ঝুড়ির মাঝে রাখুন l ব্যবহারের পূর্বে ঝুড়ির ভেতরের অংশে একটি প্লাস্টিক ব্যাগ জুড়ে দিন l ঝুড়ি পেইন্ট করে নিন রঙিন অথবা সাদা l তাতে ঝুড়ির স্থায়িত্ব বাড়বে l রুটি সেকে রাখার ঝুড়ি খানাও বাশেঁর তৈরী ব্যবহার করুণ। ব্যাবহারের পূর্বে ভেতরে হাতে সেলাই করে এক টুকরা পরিস্কার কাপড় লাগিয়ে নিন l ছোটখাটো জিনিস রাখতে বাশেঁর ঝুড়ি ব্যবহার করুন l ফিরিয়ে আনুন নিজের দেশীয় সামগ্রী l নিজেকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বস্তু ব্যবহারে অভস্ত করুন l গৃহ সাজান দেশজ নান্দনিকতায় l

Bamboo busket (5) Bamboo busket (2) Bamboo busket (1) Bamboo busket (6) Bamboo busket (4) Bamboo busket (3)

The post বিলুপ্ত প্রায় বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি appeared first on NSSB.

আগুনে পুড়ল ১০ কোটি ডলারের দাঁত আর শিং

$
0
0


01 May, 2016.

আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হলো হাতির দাঁত ও গন্ডারের শিংয়ের বড় বড় ১১টি স্তূপ। সেখানে যে পরিমাণ হাতির দাঁত ছিল তার ওজন ১০৫ টন। কয়েক হাজার হাতি হত্যা করে এই দাঁত জোগাড় করেছিল চোরা শিকারিরা। আর জড়ো করা গন্ডারের শিংয়ের ওজন প্রায় দেড় টন। অন্তত ৩৪০টি বিলুপ্তপ্রায় গন্ডার হত্যা করা হয়েছে এ জন্য। আফ্রিকার কেনিয়ার নাইরোবি ন্যাশনাল পার্কে গতকাল শনিবার এই দাঁত ও শিংয়ে আগুন ধরানো হয়। কয়েক বছর ধরে চোরাচালানিদের কাছ থেকে এসব জব্দ করা হয়েছে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা প্রথম আগুন জ্বালিয়ে এ বহ্ন্যুৎসবের সূচনা করেন। স্থানীয় সময় বিকেলে এ উৎসবের সূচনা হয়। পাইপে করে কয়েক হাজার লিটার ডিজেল ও কেরোসিন হাতির দাঁতের স্তূপে ঢেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই বহ্ন্যুৎসবের উদ্দেশ্য হাতি শিকার বন্ধ এবং এর দাঁতের ব্যবসার বিষয়ে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারিতে জনমত সৃষ্টি করা। বিশ্বে এই প্রথম এত বিপুল পরিমাণ হাতির দাঁত একসঙ্গে পুড়িয়ে ফেলা হলো। কয়েক দিন ধরে এই আগুন জ্বলবে বলে মনে করা হচ্ছে । গতকাল বহ্ন্যুৎসবের উদ্বোধনের সময় প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা বলেন, ‘এই বিশাল বিশাল স্তূপ আমাদের প্রত্যয়ের প্রচণ্ডতার বহিঃপ্রকাশ।… কেউ কেনিয়ায় হাতির দাঁতের ব্যবসা করতে পারবে না। এই ব্যবসা চলতে দেওয়া মানে আমাদের হস্তীকুল নিধনের তথা ঐতিহ্য নিধনের অনুমোদন দেওয়া।’ এর আগে গত শুক্রবার হাতি সংরক্ষণের লক্ষ্যে গঠিত আঞ্চলিক সংগঠন ‘জায়ান্টস ক্লাব ’-এর শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা বলেন, ‘হাতি হারিয়ে যাওয়ার অর্থ হলো আমাদের ঐতিহ্য হারিয়ে যাওয়া। আমরা এটা হতে দিতে পারি না।’ তিনি বিশ্বব্যাপী হাতির দাঁতের ব্যবসা বন্ধের দাবি জানান। পুরো আফ্রিকায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ হাতি রয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর এখানে ৩০ থেকে ৪০ হাজার হাতি শিকার করা হয়। এশিয়ার ক্রমবর্ধমান হাতির দাঁতের চাহিদা মেটাতেই চলে প্রকৃতির এই অনন্য প্রাণীর প্রাণসংহার। বিশ্ববাজারে হাতির দাঁতের চাহিদা ব্যাপক। কালোবাজারে এক কেজি দাঁতের দাম ১ হাজার ডলার। আর গন্ডারের শিংয়ের দাম আরও অনেক বেশি। কেজিতে ৬০ হাজার ডলার। এক কেজি সোনা বা কোকেনের দামের চেয়েও যা বেশি। চোরাচালান হওয়া হাতির দাঁতের শেষ ঠিকানা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। চীন সে দেশে হাতির দাঁত আমদানি আইন আরও কঠিন করেছে। তবে পরিবেশবাদীদের দাবি, এর আমদানি একেবারে নিষিদ্ধ করুক চীন।

Source: www.prothom-alo.com/international/article/845977

Photo Source: www.prothom-alo.com/international/article/845977

The post আগুনে পুড়ল ১০ কোটি ডলারের দাঁত আর শিং appeared first on NSSB.

ঢাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে

$
0
0


01 May, 2016.

নিজস্ব প্রতিবেদক:

একদিকে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে কুকুর নিয়ন্ত্রণে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় পশুটির উপদ্রব বেড়েছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে আক্রমণের শিকার মানুষের সংখ্যা। জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়ে গত বছর ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ৬৬ হাজার ২০৪ জন জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের সেবা নিয়েছেন। তিন বছরের মধ্যে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। এর মধ্যে শুধু গত ডিসেম্বরেই প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জনকে কুকুর কামড় দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিবছর কুকুরের কামড় খাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৪২ শতাংশই শিশু, যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। রেবিস ইন এশিয়া ফাউন্ডেশনের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শীর্ষ তিনটি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে। ২০২০ সালের মধ্যে দেশ থেকে স্থায়ীভাবে জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যে ২০১১ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জাতীয় জলাতঙ্ক নির্মূল কর্মসূচির আওতায় চারটি কর্মকৌশল নির্ধারণ করে। এগুলো হচ্ছে জলাতঙ্ক রোগ এবং এর চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করতে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম জোরদার করা। কুকুরের কামড়ের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। ব্যাপক হারে কুকুরের শরীরে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকাদান এবং লাইগেশন ও খোজাকরণের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ। এর মধ্যে ২০১২ সালে উচ্চ আদালত কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ঢাকায় এ মুহূর্তে দেড় লাখের বেশি বেওয়ারিশ কুকুর আছে। একটি মাদি কুকুর বছরে আটটি পর্যন্ত বাচ্চা প্রসব করে। তিন বছর কুকুর মারা বন্ধ থাকায় কুকুরের সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার কথা। আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরপরই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন অভয়ারণ্য নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার চুক্তি করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি ১০ হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ করেছে অথবা টিকা দিয়েছে। চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সংস্থাটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সঙ্গে অভয়ারণ্য ও হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সমঝোতা স্মারকে ডিএনসিসির পক্ষে মেয়র আনিসুল হক এবং অভয়ারণ্যের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রুবাইয়া আহমেদ স্বাক্ষর করেন। সমঝোতা স্মারকের আওতায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে ডিএনসিসি এলাকার চার হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ ইনজেকশন দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কুকুরের সংখ্যা গণনা ও কুকুরের সংখ্যা ব্যবস্থাপনা বিষয়েও কাজ করবে। আর এ-সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ বহন করবে হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল। চিকিৎসকেরা বলেন, কুকুর কামড় বা আঁচড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পানি ও কাপড় কাচা সাবান দিয়ে ভালোভাবে ক্ষতস্থান ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর যত দ্রুত সম্ভব আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তাঁরা আরও বলেন, জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর ক্ষতস্থানে ব্যথা হবে ও ঝিমঝিম করবে, জ্বরজ্বর লাগবে, পানি দেখলে বা পানি খেতে ভয় লাগবে। বাতাস ও আলো সহ্য হবে না। শ্বাসকষ্ট হবে এবং শেষ পর্যায়ে শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়বে এবং মারা যাবে।

Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/846181

Photo Source: www.hsi.org

The post ঢাকায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে appeared first on NSSB.

বৃষ্টি নেই, মরে যাচ্ছে চা–গাছ

$
0
0


01 May, 2016.

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:

দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চা-গাছের পাতা ঝলসে ও ডাল শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এতে চায়ের উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশের ১৬৬টি চা-বাগানের মধ্যে ফটিকছড়িতে আছে ১৭টি। চা-বাগানের কর্মকর্তারা জানান, উপজেলায় সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল সামান্য বৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় বাগানের আশপাশের ছড়া বা খালের পানি শুকিয়ে গেছে। মাটির আর্দ্রতা কমে গেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ চা-বাগানেই সেচব্যবস্থা নেই। তাঁরা বলেন, এই পরিস্থিতিতে চা-গাছ মরে যাচ্ছে। মাটির আর্দ্রতা না থাকায় চা-গাছে কুঁড়ি গজাতে পারছে না। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী চা-গাছ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের পতেঙ্গা কার্যালয়ের উপপরিচালক সন্তোষ কুমার মাতব্বর বলেন, গত ২৭ মার্চ তিন মিলিমিটার এবং ১ এপ্রিল দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর আর বৃষ্টি হয়নি। আগামী এক সপ্তাহে আবহাওয়ার তেমন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। একাধিক বাগানের চা-শ্রমিকেরা জানান, আগে চা-বাগানে যথেষ্ট পরিমাণ ছায়াবৃক্ষ ছিল । এগুলো অবাধে কাটার কারণে এখন অনেক বাগানেই পর্যাপ্ত ছায়াবৃক্ষ নেই। ছায়া কম থাকায় খরার সময় সরাসরি রোদের কারণে চা-গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চা-পাতার গুণাগুণও নষ্ট হয়। উপজেলার নেপচুন চা-বাগানের ব্যবস্থাপক কাজী ইরফান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, পানি একদম শুকিয়ে গেছে। শ্রমিকদের খাওয়ার পানিও নেই। হালদাভ্যালি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে বৃষ্টি না হলে চা-গাছ মরা শুরু হবে। এতে পাতা তোলা সম্ভব হবে না। দেরিতে বৃষ্টি হলে পাতা তোলা অন্তত এক মাস পিছিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম চা-সংসদ কার্যালয় সূত্র জানায়, বৃষ্টি না হওয়ায় শিশু চা-গাছ দুর্বল ও পাতা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ বছর ফটিকছড়ির চা-বাগানগুলোতে অন্তত ১ লাখ কেজি চা উৎপাদন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে চা-পাতার উৎপাদন ছিল ৭৩ লাখ কেজি। চা-সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজুল হাসান বলেন, উপজেলার বাগানগুলোর বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকানাধীন। যেসব বাগানে নিজস্ব সেচব্যবস্থা আছে, সেখানে খরার প্রভাব তেমন পড়ে না।

Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/846025

Photo Source: www.prothom-alo.com/bangladesh/article/846025

The post বৃষ্টি নেই, মরে যাচ্ছে চা–গাছ appeared first on NSSB.

সৌর বিদ্যুত্ বদলে দিয়েছে চরাঞ্চলের মানুষের জীবন

$
0
0


01 May, 2016.

সামছুজ্জামান ডলার, মতলব উত্তর (চাঁদপুর) সংবাদদাতা:

মতলব উত্তর উপজেলার চরাঞ্চলের ৩০ হাজার মানুষের কাছে বিদ্যুতের আলো পৌঁছানো অসম্ভব ভাবনা। সূর্য পশ্চিম আকাশ থেকে অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নেমে আসে আঁধার। চরাঞ্চলবাসী সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত যুগ যুগ। কিন্তু সৌর বিদ্যুত্ বদলে দিয়েছে মতলব উত্তর উপজেলার বিশাল ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষের জীবন। সারা দেশের মানুষ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হলেও এই চরাঞ্চলের লোকজন তখনো নির্বিঘ্নে জ্বালিয়ে যাচ্ছে সৌর বিদ্যুত্। এই সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে চরাঞ্চলের মানুষ রাতের আঁধারকে জয় করে এখন ঘরে ঘরে ফকফকা আলো জ্বালাচ্ছেন। ঘরকে আলোয় আলোকিত করার পাশাপাশি নিজেদের সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার ব্যাপারে খুবই উত্সাহী। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে চরাঞ্চলবাসী এখন চালাচ্ছেন টেলিভিশন, সিডি, ফ্যানসহ অনেক কিছুই এবং চার্জ করছেন মোবাইল, রিচার্জেবল ফ্যানসহ এ জাতীয় অনেক কিছু। বর্তমানে তাদের জীবনে ছোঁয়া লেগেছে আধুনিকতার। মতলব উত্তর উপজেলায় গ্রামীণ শক্তি, রহিমা আফরোজ, রেডি, আইডিএফ, ফাউন্ডেশন, শক্তি ফাউন্ডেশনসহ ২০টির মতো সৌর বিদ্যুত্ কোম্পানি চরাঞ্চলে কাজ করছে। মেঘনার পশ্চিম পাড়ের বোরচর, চরকাশিম, ৬ষ্ঠ খণ্ড বোরচর, অঞ্চলের এখলাছপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোসাদ্দেক হোসেন মুরাদ জানান, সৌর বিদ্যুতের আলো জ্বলার কারণে চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন বদলাচ্ছে। তাদের জীবনে এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/country/2016/05/01/117153

Photo Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/country/2016/05/01/117153

The post সৌর বিদ্যুত্ বদলে দিয়েছে চরাঞ্চলের মানুষের জীবন appeared first on NSSB.

বুয়েটের গবেষণা –সুন্দরবনের ৪২% তলিয়ে যেতে পারে ২০৫০ সাল নাগাদ

$
0
0


01 May, 2016.

মোশতাক আহমদ ও আরিফুর রহমান :

তাপমাত্রা বৃদ্ধির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে শূন্য দশমিক ৫ মিটার। এতে সুন্দরবনের দুই হাজার ২৬১ বর্গকিলোমিটার বা ৪২ শতাংশ পুরোপুরি ডুবে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে উপকূলীয় ১৯ জেলার দুই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা তলিয়ে যাবে। এতে বাস্তুহারা হবে ২৫ লাখ মানুষ। বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বুয়েটের এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। ১৯৭১ থেকে ১৯৯৭—এই ২৬ বছর বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। এরপর থেকে আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি বদলাতে থাকে। ওই বছর থেকেই দেশে ধীরে ধীরে গড় তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্টসহ বিশ্বের নামকরা ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর গত ৪৫ বছরে বাংলাদেশে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারা দেশে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ২৪টি স্টেশনের তথ্য-উপাত্ত গত চার বছর ধরে বিশ্লেষণ করে এ তথ্য বের করেছে বুয়েটসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান। তাতে দেখা গেছে, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি এবং ২০৮০ সালে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। যদিও প্যারিস চুক্তিতে বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বুয়েটের আইডাব্লিউএফএমসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান বলছে, এ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা সম্ভব নয়। গবেষণা প্রতিবেদনটি গতকাল শনিবার বুয়েটের কাউন্সিল ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি অবার্টসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন বুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর খালেদা আকরাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডাব্লিউএফএমের অধ্যাপক ও গবেষণার সমন্বয়ক ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে আগাম বর্ষায় (মার্চ-মে) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ছে। ২০২০ ও ২০৫০ সালে এটি ১২৫ মিলিমিটার থেকে ৬১৫ মিলিমিটার পর্যন্ত বেশি হতে পারে। এ ছাড়া বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতিনিয়তই বাড়বে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.৫ মিটার বাড়লে উপকূলীয় এলাকার ১৯ জেলার ২৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাতে দুই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হবে। এক মিটার উচ্চতা বাড়লে তিন হাজার ৯৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হবে উপকূলীয় এলাকায়। তাতে ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর দেড় মিটার উচ্চতা বাড়লে ৮০ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হবে। আর তাতে পাঁচ হাজার ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা ডুবে যাবে। সুন্দরবন নিয়ে করা ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, পানির উচ্চতা ০.৫ মিটার বাড়লে ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবনের ৪২ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হবে বা তলিয়ে যাবে। আর এক মিটার উচ্চতা বাড়লে ৬৯ শতাংশ এবং দেড় মিটার বাড়লে বনের ৮০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যাবে। গবেষণাটির সঙ্গে যুক্ত ছিল যুক্তরাজ্যের একসেটার বিশ্ববিদ্যালয় ও ম্যাট কার্যালয়, নেদারল্যান্ডসের ফ্রি ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিসহ ১৬টি সংস্থা। অনুষ্ঠানে গবেষকরা জানান, তাঁরা ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার অভিজ্ঞতা পর্যবেক্ষণ করে আগামী ২১০০ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা কী হতে পারে এর একটা চিত্র খুঁজে পেয়েছেন। এ বিষয়ে তিনটি উপস্থাপনা তুলে ধরা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এ হারে বাড়লে বাংলাদেশে বোরোর উৎপাদন ২০২০ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ এবং ২০৮০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ কমে যাবে। বর্তমানে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজার ৪৮৪ জন বসবাস করে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.৫ মিটার বাড়লে উপকূলীয় এলাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনবসতির ঘনত্ব বেড়ে হবে তিন হাজার ৩৮০ জন, এক মিটার বাড়লে পাঁচ হাজার ৭৭৭ আর দেড় মিটার বাড়লে সাত হাজার ৫৮৮ জন। অনুষ্ঠানে বলা হয়, বিশ্বের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে গত ২২ এপ্রিল প্যারিস চুক্তিতে বিশ্বের ১৭৫টি দেশ স্বাক্ষর করে। সেখানে বাংলাদেশও স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এ চুক্তির কার্যকারিতা বিষয়ে গবেষণায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে যে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে তার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ড্রেজিং করে বা পুনঃখনন করে আমাদের নদ-নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ২৩টি বড় নদী খননের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সে সঙ্গে এসব নদীর সংযোগ খালগুলোকেও খননের আওতায় আনা হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি অবার্ট বলেন, প্যারিস সম্মেলনে শর্ত পূরণে সব দেশ আন্তরিকভাবে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদী। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন পানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইনুন নিশাত, আইডাব্লিউএফএমের পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামসহ ভারত ও বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞরা।

Source: www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2016/05/01/353501

Photo Source: www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2016/05/01/353501

The post বুয়েটের গবেষণা – সুন্দরবনের ৪২% তলিয়ে যেতে পারে ২০৫০ সাল নাগাদ appeared first on NSSB.

আবাসস্থল হারিয়ে হুমকিতে বন্য প্রাণী

$
0
0


01 May, 2016.

বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী, বাগেরহাট:

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের তুলাতলা এলাকার প্রায় ১০ একর বনভূমির ১০০টি স্থানে খণ্ড খণ্ডভাবে জ্বলতে থাকা আগুন অবশেষে সম্পূর্ণভাবে নেভানো হয়েছে। একটানা ৬৬ ঘণ্টা ধরে কাজ করে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের কর্মীরা। আগুন দেওয়ার অভিযোগে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বনের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে বুধবার রাতেই বন আইনে ওই মামলা দায়ের করেন। এদিকে সুন্দরবনে বারবার আগুন লাগার কারণে আবাসস্থল হারিয়ে বন্য প্রাণী হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবাস হারানোর মতো বড় হুমকি আর হতে পারে না। আগুন নিভেছে : সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের তুলাতলা এলাকায় প্রায় চার দিন ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে সাড়ে তিন একর বনভূমি পুড়ে গেছে বলে বন বিভাগ জানিয়েছে। গতকাল বিকেলে প্রধান বনসংরক্ষক মো. ইউনুছ আলী আগুনে পুড়ে যাওয়া বনের ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আজ রবিবার পরিদর্শনে আসছেন বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপসহকারী পরিচালক মো. মানিকুজ্জামান জানান, বুধবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁরা একটানা কাজ করে সম্পূর্ণভাবে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছেন। বনের ওই অংশে আগুন বা কোনো ধোঁয়া নেই বলে তিনি নিশ্চিত করেন। ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা আরো জানান, বনের তুলাতলা এলাকায় প্রায় ১০ একর বনভূমির অন্তত ১০০টি স্থানে খণ্ড খণ্ডভাবে আগুন জ্বলছিল। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় এবং প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে আগুন নেভাতে তাঁদের বেগ পেতে হয়। প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে আড়ুয়ার খালে যন্ত্র বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে পানি আনতে হয়েছে। সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাহিদুল ইসলাম জানান, তুলাতলা এলকায় ধোঁয়া বা আগুনের কোনো অস্তিত্ব নেই। আগুনে সাড়ে তিন একর বনভূমি পুড়ে জ্বলানি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ডিএফও জানান। ডিএফও জানান, তুলাতলা এলাকায় আগুন লাগানোর ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে বন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বন আইনে দায়েরকৃত ওই মামলা বন বিভাগ নিজেরাই তদন্ত করে বাগেরহাট মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতে অভিযোগ দাখিল করবে। উল্লেখ্য, গত বুধবার তুলতলা এলাকায় আগুন লাগে। এই নিয়ে এ মাসেই চারবার আগুনের ঘটনা ঘটল। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল ধানসাগর স্টেশনের আওতাধীন সুন্দরবনের পচাকোড়ালিয়া এলাকায় আগুনের ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে এবং ১৮ এপ্রিল প্রায় একই এলাকার আব্দুল্লার ছিলা নামক স্থানে আগুনের ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে বন বিভাগ মামলা দায়ের করে। আব্দুল্লার ছিলা এলাকায় আগুন দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত উত্তর রাজাপুর গ্রামের খলিলুর রহমান (৩৫) ও পূর্ব রাজাপুর গ্রামের সাইফুল হাওলাদার নামের (২২) সন্দেহভাজন দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। বন বিভাগের দাবি, মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আগুন দিয়ে থাকতে পারে। এ ঘটনার পর বন বিভাগ সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে বনজ সম্পদ আহরণ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। আবাসস্থল হারিয়ে হুমকিতে বন্য প্রাণী : ২০০২ থেকে ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৪ বছরে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় ২১ বার আগুনের ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক আগুনে প্রায় ৭০ একর বনভূমির গাছপালা ও লতাপাতা পুড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া ওই বনভূমিতে নতুন করে ম্যানগ্রোভ জন্ম নিচ্ছে না। আগুনে বনের গাছপালা যেমন পুড়ছে, তেমনি গাছ ও লতাপাতার গোড়ার অংশ এবং মাটিও পুড়ছে। বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবনসংলগ্ন উত্তর রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকির হোসেন খান জানান, এক সময় ভোলা নদীর পশ্চিম পাড় থেকে সুন্দরবনের এ অংশ গাছপালায় ভরপুর ছিল। দেখা মিলত বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন ধরনের বন্য প্রাণীর। বাঘের আনাগোনা ওই অংশে এত বেশি ছিল যে, মাঝেমধ্যে বাঘ ভোলা নদী পার হয়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ত। ১৫-২০ বছর আগে থেকে বনের গাছপালা কমতে থাকে। আগের মতো আর বন্য প্রাণী দেখা যায় না। বনবিষয়ক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ড টিমের প্রধান নির্বাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনে একের পর এক আগুনে আবাসস্থল হারানোয় বন্য প্রাণীদের জন্য এর চেয়ে আর বড় হুমকি হতে পারে না। আগুনে মানুষের বাসস্থান পুড়ে গেলে যেমন ক্ষতি হয়, বন্য প্রাণীদেরও ঠিক একই ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। আবাস হারানোর কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৫-২০ প্রজাতির প্রাণী হারিয়ে গেছে এবং সংখ্যায়ও অনেক প্রাণী কমে গেছে। এমনকি সুন্দরবন থেকে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে আবাসস্থল হারানো অন্যতম কারণ বলে তিনি মনে করেন। অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম আরো বলেন, দেশের অনেক স্থানেই এক সময় বাঘের দেখা মিলত। এখন সুন্দরবনই বাঘের শেষ আশ্রয়স্থল। সেখানেও বাঘ নিরাপদ নয়। আগুন বাঘের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি হুমকি বলে তিনি মনে করেন। ওয়াইল্ড টিমের প্রধান বলেন, সুন্দরবনে থাকা প্রতি বন্য প্রাণী নিজস্ব হোমরেঞ্জ তৈরি করে সেখানে বসবাস করে। বাঘেরও নিজস্ব হোমরেঞ্জ রয়েছে। আগুনে বনের গাছপালা পুড়ে গেলে বাঘসহ সব ধরনের বন্য প্রাণী তাদের হোমরেঞ্জ হারায়। পরে তাদের নতুন করে হোমরেঞ্জ তৈরি করতে অনেক বেগ পেতে হয়। এমনকি ওই সময় যেসব বন্য প্রাণী প্রজননমুখী থাকে তাদের প্রজননের ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটে। খুলনা বিভাগীয় বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) মো. জাহিদুল কবির বলেন, বনে আগুন লাগলে মাটির নিচে বসবাসকারী সাপ, ব্যাঙ, কেঁচোসহ বিভিন্ন ধরনের পোকা মারা যায়। এমনকি কোনো গাছে পাখির বাসায় বাচ্চা থাকলে পাখি উড়ে গেলেও তার বাচ্চা আগুনে পুড়ে মারা যায়। সব মিলে বনের উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্যের ক্ষতি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, একের পর এক আগুনে বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে বনের জীববৈচিত্র্য। জোয়ার-ভাটা প্রবাহমান না থাকায় পুড়ে যাওয়া ওই বনভূমিতে নতুন করে ম্যানগ্রোভ জন্ম নিচ্ছে না। জানা গেছে, ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের মোট আয়াতন ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলেমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার ও জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৩ বর্গকিলোমিটার। সুন্দরবন বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’-এর আবাসস্থল এ বন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক দেয়াল হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে সুন্দরবন। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। ২০০৪ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি, হরিণ এক থেকে দেড় লাখ, বানর ৪০ থেকে ৫০ হাজার, বন্য শূকর ২০ থেকে ২৫ হাজার, কুমির ১৫০ থেকে ২০০টি ও উদবিড়াল রয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার।

Source: www.kalerkantho.com/print-edition/news/2016/05/01/353515

Photo Source: www.kalerkantho.com/print-edition/news/2016/05/01/353515

The post আবাসস্থল হারিয়ে হুমকিতে বন্য প্রাণী appeared first on NSSB.


পঞ্চগড়ে সৌর সেচ পাম্পের সাহায্যে বছরে তিন ফসল

$
0
0


01 May, 2016.

মতিউর রহমান ও সাজ্জাদুর রহমান, পঞ্চগড় থেকে:

পঞ্চগড় জেলার বোদা, পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার শত শত কৃষক স্বল্প খরচে সৌর বিদ্যুত্ ব্যবহার করে একরের পর একর জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে এসেছেন। কৃষকরা বছরে এক ফসলের স্থলে তিন ফসল আবাদ করছেন। জ্বালানি তেল নির্ভর বিদ্যুত্ নেই তো কি হয়েছে সূর্যের আলো আছে না। সূর্যের আলো এসে পড়ছে সোলার প্যানেলে আর সৌর শক্তির সাহায্যে উত্পাদিত বিদ্যুতে চলছে পাম্প। আর এই পাম্পের পানি দিয়ে শত শত বিঘা জমি সেচ দিয়ে আবাদ করা হয়েছে বোরো ধান। দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ধানখেতগুলো এখন সোনালি রং ধারণ করতে শুরু করেছে। স্বল্প খরচে বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকদের চোখে মুখে এখন খুশির ঝিলিক। সোলার ইরিগেশন পদ্ধতি কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। প্রতিবছরই আবাদি জমির পরিমাণ বাড়ছে, পতিত ও অনাবাদি জমিতে ফল ও ফসলের চাষ করা যাচ্ছে। বিভিন্ন শস্য চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষিতে বৈচিত্র্য আসায় কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। জানা গেছে, বছর পাঁচেক আগে বোদা উপজেলার বনগ্রাম ঠাকুরপাড়া ও শিকারপুর গ্রামের ৮১ জন কৃষক সর্বপ্রথম সৌর বিদ্যুত্ চালিত সেচ ব্যবস্থা চালু করে চাষাবাদ শুরু করেন। এতে লাভবান হওয়ায় এ সেচ প্রকল্প বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বর্তমানে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন এলাকায় ২২টি সোলার ইরিগেশন প্রকল্প স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ১৫টি, রহিম আফরোজের ৫টি এবং এনারজি প্যাকের ২টি সোলার ইরিগেশন সিস্টেম স্থাপন করা হয়। বোদা উপজেলায় ১২টি, পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ১০টি এবং তেঁতুলিয়া উপজেলায় ১টি সৌর সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এসব সেচ পাম্প দিয়ে চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ৩৫০ একর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। সৌর পাম্পের সাহায্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। সারাবছর সময়মতো পর্যাপ্ত পানি প্রাপ্তির নিশ্চয়তাসহ অল্প খরচে একাধিক ফসল উত্পাদন করতে পারায় কৃষকদের মধ্যে সৌরশক্তি চালিত সেচ পাম্পের ব্যবহার বেড়েছে। বর্তমানে সোলার ইরিগেশন সিস্টেমের মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষকরা শত শত অনাবাদি ও পতিত জমিকে চাষাবাদের আওতায় নিয়ে এসেছেন। বোরো ধান ছাড়াও কলা, ভুট্টা, বাদামসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন কৃষকরা। জেলার বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের বেংহারী ইসলামপুর কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. লুত্ফর রহমান জানান, তাদের এলাকায় পিডিবি ও আরইবি’র বিদ্যুত্ সংযোগ নেই। তাই আমরা মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এখানে সোলার ইরিগেশন সিস্টেম স্থাপন করেছি। গত ৩ বছর ধরে এখানকার কৃষকরা সৌর সেচ সুবিধা নিয়ে ফসল উত্পাদন করে আসছে। একই উপজেলার মালিপাড়া কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আনিছুর রহমান জানান, ডিজেল চালিত পাম্পের তুলনায় সৌর বিদ্যুতের সেচ পাম্পে খরচ অনেক কম। এই সেচ পাম্পের সাহায্যে বছরে কমপক্ষে ৩টি ফসল উত্পাদন করা সম্ভব হয়। তারা বর্তমানে ৫০ বিঘা জমিতে বছরে ৩টি ফল ও ফসল চাষাবাদ করছেন। সেচ খরচ হিসাবে প্রত্যেক কৃষককে সমিতিকে বছরে বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়। জেলার সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের নাককাটি কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. মজিরউদ্দিন জানান, ডিজেলের সাহায্যে বোরো চাষাবাদে খরচ হতো ৪ হাজার টাকা। সৌর বিদ্যুত্ চালিত সেচ পাম্পে বোরো চাষে খরচ হয় মাত্র ২ হাজার টাকা। জগন্নাথপাড়া শিকারপাড়া কৃষক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিটি সোলার সেচ পাম্প স্থাপনে খরচ হয়েছে ২৮ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা। ফসল উত্পাদন শেষে কিস্তির মাধ্যমে ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করছি। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার ফাস্ট অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপক মো. এনামুল হক জানান, ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ১৪টি সমিতির আওতায় ১৫টি সোলার ইরিগেশন সিস্টেম স্থাপন করেছেন। এসব সমিতির সহস াধিক কৃষককে ১০ বছর মেয়াদি প্রায় ১৪ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/last-page/2016/05/01/117230

Photo Source: www.ittefaq.com.bd/print-edition/last-page/2016/05/01/117230

The post পঞ্চগড়ে সৌর সেচ পাম্পের সাহায্যে বছরে তিন ফসল appeared first on NSSB.

আনেমনে নিমোরোজা

$
0
0
Wind flower

Wind flower| ছবি নিজ | বোয়া দ্য ল্যা কমব্র (বেলজিয়াম)

বসন্তের শুরুতে ইউরোপের কিছু দেশে ফরেস্ট গুলোতে অল্প সময়ের জন্য বসে তারার মেলা। আমি অধির হয়ে একটা বছর অপেক্ষায় থাকি এই অপার রুপ এক নজর দেখার জন্য। প্রত্যেক বছর ছবি তুলে নিয়ে আসি তবু যেন মনে হয় প্রকৃত রুপ আমার ক্যামেরায় ধরা দেয়নি। বনে মেলা বসানো ফুলটির নাম আনেমনে নিমোরোজা। রেনানকিউলেসি পরিবারের আনেমনে গনের ফুল, এর আরো কিছু নাম রয়েছে যথাক্রমে উড আনেমনে, উইন্ড ফ্লাওয়ার। মৃদু বাতাসে এক সাথে সাদা চাদরের ন্যায় ভাসতে থাকে বলেই একে উইন্ড ফ্লাওয়ার বলা হয়। এছাড়াও একে থিম্বেলউইড ও স্মেল ফক্স ও বলা হয়।

Wind flower

Wind flower| ছবি নিজ | বোয়া দ্য ল্যা কমব্র (বেলজিয়াম)

উড আনেমনে মাটির নিচে শেকড় বা rhizomes এর ম্যাধ্যমে খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করে অল্প সময়ে কার্পেটের মত বিছিয়ে যায়। বিভিন্ন পোকা মাকড় বিশেষ করে hoverfly এর ম্যাধ্যমে এর পলিনেশন ঘটে। শীতের ঘুম শেষে পর্নমোচি বনের ঝরা পাতা ভেদ করে বসন্তের প্রারম্ভে মাথায় ফুল সাজিয়ে বন আলো করে এরা। এই গাছের বড় বৈশিষ্ট এরা খুব দ্রুত সারা বনে ছড়িয়ে পরে। অল্প কিছু কন্দ লাগিয়ে রাখলে পরের বছর বেশি সংখায় গাছ দেখা যায়। ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয় গাছ। ফুল গোলাপি, সাদা, হলুদ ও নীল রঙ এর হয়ে থাকে। দুই সেন্টিমিটার ডায়ামিটার ছয় থেকে কখনো আট পাপড়ির ফুল ফুটে।
মানুষ ও অন্যান্ন প্রাণির জন্য উড আনেমনে খুব বিষাক্ত। গাছের প্রত্যেক অংশ টক্সিক। তথাপি মেডিসিনাল প্লান্ট হিসেবে আনেমনে ব্যবহার হয়। এই গাছে protoanemonin রয়েছে যা স্কিন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইরিটেশন, মুখে তিক্ত স্বাদ বা মুখ ও গলা জ্বলা, মুখে আলসার, বমি বমি ভাব , বমি , ডায়রিয়া , এবং রক্তবমন ইত্যাদির চিকিৎসায় সাহায্যকারী।

Wind flower

Wind flower| ছবি নিজ | বোয়া দ্য ল্যা কমব্র (বেলজিয়াম)

বনে ফুটে থাকা এই ফুল এখন অনেকেই বাসা ও বাগান সাজাতে অলংকারী গাছ হিসেবে লাগিয়ে থাকেন। কিন্তু আমারতো সাগর রয়েছে তাই ছোট পুকুর কাটার সাধ হয়নি, মন চাইলেই ছুটে যাই বসন্তে আনেমনের বনে।
** “Hoverflies” sometimes called flower flies, or syrphid flies.
** “Protoanemonin” (sometimes called anemonol or ranunculol is a toxin found in all plants of the buttercup family (Ranunculaceae).

The post আনেমনে নিমোরোজা appeared first on NSSB.

আমাদের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও গ্রীস্মের তাপদাহ

$
0
0
সবুজে শ্যামলে পরিপুর্ন ধানমন্ডি লেক।

সবুজে শ্যামলে পরিপুর্ন ধানমন্ডি লেক।

জনজীবন আজ বিপর্যস্ত। ঢাকা সিটিতে অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠা নগরায়নের কারনে আজ আমাদের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যেখানে বিশ্বের সব উন্নত নগরীতে পরিকল্পিত ভাবে বৃক্ষের আচ্ছাদন তৈরী করা হয় যার ক্যানপিতে গড়ে উঠে একটি শ্যামল স্নিগ্ধ শহর কিন্তু আমাদের শহরে নতুন রাস্তা, হাউজিং, স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন সরকারী বেসরকারি দপ্তর তৈরি করতে যেয়ে প্রতিবছরই কেটে ফেলা হচ্ছে বহু বছর ধরে বেড়ে উঠা বৃক্ষ। যেখানেই উন্নতির ছোঁয়া লাগছে সেখানেই বৃক্ষ নিধন এ কেমন সভ্যতা! এ কেমন উন্নতি! একবারও আমরা কেউ ভেবে দেখছি না এই বৃক্ষগুলিকে বাঁচিয়ে রেখে বিকল্প কোন পথ বের করা যায় কিনা।

উদ্ভিদরাজী বিহীন ঢাকার একটি রাজপথ।

উদ্ভিদরাজী বিহীন ঢাকার একটি রাজপথ।

আমরা আজ বিশেষ হুমকির সম্মুখিন কেননা বৃক্ষ নিধন করে আমরা নিজেরাই আমাদের বিপদ ডেকে আনছি। ঢাকা শহরে ইট, পাথর, ধাতবপাত,এলোমেনিয়াম ও কাঁচের তৈরি সুউচ্চ ইমারত গুলোতে সরাসরি সুর্যালোক পড়ে প্রচন্ড ভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আমাদের পরিবেশ। যে কোন এলাকার প্রাকৃতিক ভাবে সৃস্ট তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রন করতে হলে দরকার সবুজ শ্যামল পরিবেশ আর এই ধরনের পরিবেশের প্রধান নিয়ামক হলো উদ্ভিদরাজী ও জলাধার। আমাদের দেশে আমরা সামান্যতম একটি জলাধারকেও ভরাট করে নগর নির্মান করছি কিন্তু একবারও ভেবে দেখার চেস্টাও করছি না যে সৃস্ট তাপমাত্রা কিভাবে শোষিত হবে। আর জলাধার না থাকার কারনে মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে ফলে যা কিছু উদ্ভিদ আছে সেগুলোও আজ বিপন্ন প্রজাতিতে পরিনত হওয়ার উপক্রম।

ক'দিন আগেও যেখানে সবুজে শ্যামলে পরিপুর্ন ছিলো কিন্তু এখন শুধুই কংকাল।

ক’দিন আগেও যেখানে সবুজে শ্যামলে পরিপুর্ন ছিলো কিন্তু এখন শুধুই কংকাল।

আমাদের যে কয়টি হাইওয়ে আছে যদি চলার পথে একটু নজর দেয়া যায় তাহলে ভয়াবহ চিত্র চোখে পড়ে। রাস্তার দু’পাশের সবুজ গাছপালা গুলি হঠাৎ কংকাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি এর কারন অনুসন্ধান করতে যেয়ে দেখলাম কে বা কাহারা সারা শহরের বর্জ্য রাস্তার পাশে এইসব গাছের গোড়ায় ফেলছে একসময় রাস্তার পাশে বিশালাকার বর্জ্যের পাহাড় সৃস্টি হয়ে রাস্তায় ভেসোকন্সট্রিকশন হচ্ছে এমতাবস্থায় কোথা হতে যেন কিছু বান্ধব এসে জমাকৃত বর্জ্যের স্তুপে দাহ্য পদার্থ ঢেলে অগ্নি সংযোগ ঘটিয়ে রাস্তার ভেসোডাইলেশন করে পথচারিদের বিশেষ উপকার করছেন। ফলশ্রুতিতে সব সবুজ শ্যামল জ্বলে পুড়ে ছাড়খার। এক সময় দেখা যায় এর আশে পাশে ছোট্র একটা কুঠির উঠিয়ে জনকল্যানে নিয়োজিত হয়েছেন কিছু মানুষ। হায়রে আমাদের পরিবেশ প্রতিবেশ…!!

আমাদের দুষিত বুড়িগঙ্গা

আমাদের দুষিত বুড়িগঙ্গা

ধ্বংশ হলো সেই এলাকার পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা। এইসব সুউচ্চ বৃক্ষে বসবাসরত প্রানীকুল বিপন্ন হলো আর এই সব প্রানীকুলের উপর যে সকল ছোট ছোট প্রানীরা নির্ভরশীল তারাও নিঃশেষ হলো আর রইলো বাকী মনুষ্যকুল। ধ্বংশ হলো ফুড চেইন পরিনামে মানুষের রোগ ব্যাধি দিন দিন বেড়েই চলছে। ফুড চেইন ধ্বংশের কারনে কিছু কিছু বিশেষ প্রজাতির পোকা মাকড় মৌমাছি প্রজাপতি বিপন্ন হয়ে যাওয়ার ফলে উদ্ভিদের পরাগায়ন সঠিক ভাবে না হওয়াতে অঞ্চল ভেদে কিছু প্রজাতির ঔষধী উদ্ভিদ নিঃশ্চিন্ন হয়ে গেলো। এহেন পরিস্থিতিতে এমন একটা সময় আসবে যখন আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রয়োজনীয় পুস্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকার কারনে সামান্য সর্দি জ্বর হয়ে পটল তুলতে যাবে। কেননা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারানোর ফলে যত্রতত্র এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে করতে একসময় সব কিছুই রেজিস্টেন্ট হয়ে যাবে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি আমরা দেখে যেতে পারবো কিনা জানি না তবে এই ভেবে গা শিহরিয়ে উঠে আমরা আমাদের আগত প্রজন্মের জন্য কি রেখে যাচ্ছি!

আমার ছেলেবেলায় আষাঢ় মাসে ধান ক্ষেতের আলে উনিয়া(উইন্যা হলো বাঁশের তৈরি মাছ ধরার যন্ত্র) পেতে ও জলাধারে পলো দিয়ে যে পরিমান মাছ ধরেছি আজকাল তা কল্পনা করাও মহা অন্যায়। আমাদের জলাশয়ের ইকোলজি ইকোসিস্টেম ধ্বংশ করে দেয়া হয়েছে। এইসব জলাশয়ে প্রান নিয়ে কোন প্রানী বেঁচে থাকতে পারেনা। উদাহরন তো আমাদের বুড়িগঙ্গা। তাহলে বলুন আমাদের নতুন প্রজন্ম কই পাবে সেই দারকিনা মাছ শরপুটি মাছ? তাহলে কি ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষম জাতি গঠন হবে? সময় এসেছে ভেবে দেখার,সময় এসেছে সবুজ শ্যামলকে রক্ষা করার। না হয় সে দিন আর বেশী দুরে নয় আমরা আমাদের তৈরি ফাঁদে পা দিয়ে মরবো।

ইটের ভাটায় দুষিত হচ্ছে আমাদের পরিবেশ।

ইটের ভাটায় দুষিত হচ্ছে আমাদের পরিবেশ।

Bio-diversity, Ecology, Habitat ইত্যাকার নানা শব্দ আমাদের ভাষার জগতে খুব চালু আছে। প্রতিবছর বসে বিশ্ব ধরিত্রী সন্মেলন। Bio-diversity রক্ষার্থে পাস করা হয় নানা আইন কানুন। কিন্তু মুনাফা খোর এই পুঁজিবাদী সমাজে কোনকিছুই কার্যকর হয়না। সবুজ বিপ্লবের নাম দিয়ে ধ্বংস করা হয় প্রাণিবৈচিত্র। এরকম একরৈখিক উন্নতি আমার মত অতি অল্প জ্ঞানেই ধরে নেয়া যায় এটা ভাল এটা খারাপ বা ব্যবসার খাতিরে ঢালাওভাবে Monoculture মোটেও সুখকর নয়।

আবার কেউ কেউ আছেন যাদের এসব নিয়ে দার্শনিকভাব ও তৎপরতায় সোচ্চার। “সব্বে সত্তা সুখিতা ভবন্ত” এমন বাণী দ্বারা জগৎ জোড়া আলোড়ন তুলেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। কই আমরা কি মেনেছি এই বাণী? চলুন এই ধরিত্রীর আশ্রয়ে থেকে সবুজ শ্যামলের ভালবাসায় জীবজন্ম সুখময় করে তুলি।

The post আমাদের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও গ্রীস্মের তাপদাহ appeared first on NSSB.

সামুদ্রিক আগাছা Sargassum

$
0
0

পরিপক্ক সারগাসাম

পরিপক্ক সারগাসাম

সমুদ্র তার বক্ষে শুধু প্রানীদের আশ্রয় দেয়নি দিয়েছে অনেক উদ্ভিদের আশ্রয়। তাইতো আমরা উপমা দিয়ে থাকি “সমুদ্রের মত বিশাল হৃদয়”। এমনি এক উদ্ভিদ সারগাসাম এই বিশাল সমুদ্রে আশ্রিত যাকে মেক্রো শৈবাল বলা হয়। এটি মুলত বাদামি শৈবাল যা Phaeophyceae শ্রেনী ভুক্ত ও Fucales বর্গের সামুদ্রিক উদ্ভিদ। এদের অসংখ্য প্রজাতি আছে যারা ক্রান্তিয় ও উপক্রান্তিয় সমুদ্রে বসবাস করে। আমাদের সেন্টমার্টিন কোরাল দ্বীপে এদের দেখা যায়।পর্তুগীজ নাবিক এই শৈবালকে প্রথম Sargasso নামক সমুদ্রে দেখতে পেয়ে এর নামকরন করেন Sargassum.তখন এই সব শৈবাল নাবিকদের সমুদ্র পথে চলাচলে খুবই বিঘ্ন ঘটাতো। Sargassum বর্তমানে চাষ করা হয় যা ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য।চায়নাতে সারগাসাম(S pallidum)পাউডার চা হিসেবে heat phlegm এর চিকিৎসায় পান করা হয়।

সারগাসাম বড় করে দেখানো হয়েছে

সারগাসাম বড় করে দেখানো হয়েছে

পুরু কান্ড যুক্ত সারগাসাম সমুদ্রের তীরের কাছাকাছি জন্মে। কিছু কিছু সামুদ্রিক প্রানীদের প্রধান খাদ্য হলো সারগাসাম। এছাড়া ইউরোপ ও আমেরিকাতে মানব স্বাস্থের জন্য উপকারি হিসেবে সারগাসাম কে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যক্ষা উপশমে, আথ্রাইটিস, ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ও অনেকের মতে সারগাসাম খেলে অপজিট সেক্সের প্রতি আকর্ষন বৃদ্বি পায়। বহু বছর ধরে চায়নাতে ক্যান্সার ও টিউমারের চিকিৎসায় Sargassum ব্যবহার করা হচ্ছে। বাচ্চা প্রসব কালীন সময়ে cervix কে dilate করতেও সারগাসাম ব্যবহার করা হয়।

শৈবাল বিশ্বব্যাপী একটি গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ। বাংলাদেশে যদিও সামুদ্রিক শৈবাল চাষ একটি নতুন ধারনা। কিন্তু এ দেশেই রয়েছে সামুদ্রিক শৈবাল চাষের অপার সম্ভাবনা। আমাদের দেশের প্রায় ৭১০ কি.মি.ব্যাপী রয়েছে সমুদ্রসৈকত। যেখানে পরিকল্পিত বাণিজ্যিকভাবে শৈবাল চাষ অর্থনৈতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ১৩৩ প্রজাতির অধিক শৈবাল পাওয়া যায়। (Dr Nurul Islam et el) যার মধ্যে ৮ প্রজাতির শৈবাল বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ যা সাধারনত সবুজ(Cholorophyta),লাল(Rhodophyta) ও বাদামী(Phaeophyta) রঙের হয়ে থাকে।

প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সামুদ্রিক শৈবালের গুরুত্ব অপরিসীম। এর রয়েছে অনেক ঔষধি গুন। লাল ও বাদামি বর্ণের শৈবালে ক্যারোটিন নামে এক ধরনের উপাদান আছে যা মানবদেহে খাদ্যাভাসে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমায়। ডায়রিয়া এবং টিউমার বৃদ্ধি রোধ ও প্রতিরোধ করে। এতে বিদ্যমান ক্যরাজিনান মানবদেহের উচ্চরক্ত চাপ (BP)কমাতে সহায়তা করে। ইনসুলিন উৎপাদনকারী প্যানক্রিয়াসের নিস্ক্রিয়কোষ গুলোকে ধীরে ধীরে পুনরায় উজীবিত করে তোলে যা ইনসুলিন নিঃসরনে সাহায্য করার কারনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে। হৃদরোগ, ব্রেণস্ট্রোক-এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

Juvinile Sargassum

Juvinile Sargassum

সামুদ্রিক শৈবালের রয়েছে নানাবিদ ব্যবহার। পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান-প্রোটিন, ভিটামিন, লৌহ, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, বিটা ক্যারোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৬, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন ডি রয়েছে শৈবালে। দেশীয় প্যাকেটজাত ও কোমল পানীয়, জেল, জেলি, সংরক্ষিত খাদ্যে, আইস ক্রিম, সেম্পু, টুথপেস্টসহ বিভিন্ন প্রকার নিত্য ব্যবহার্য জিনিস উৎপাদনে ব্যবহার হয় শৈবাল। তথা মানবদেহে শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। এছাড়াও জুতার পলিশ তৈরীতে সামুদ্রিক শৈবাল প্রচুর পরিমানে ব্যবহার হয়।শৈবাল সার উৎপাদন, সমুদ্রের দূষন রোধেও ভূমিকা রাখে।

Juvenile stage of Sargassum

Juvenile stage of Sargassum

সামুদ্রিক শৈবালের বিভিন্ন প্রকার পিগমেন্ট রঙ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।বিভিন্ন রকমের প্রশাধনী তৈরিতে যেমন লিপস্টিক তৈরী করতে শৈবালের pigment ব্যবহার করা হয় ও এই পিগমেন্ট খুবই উন্নতমানের। সামুদ্রিক শৈবালের পিগমেন্ট ব্যবহার করে কিস প্রুফ (kiss proof) লিপস্টিক তৈরি করা হয় যা হালের ফ্যাশনে আজকাল খুবই জনপ্রিয়।বাংলাদেশের বিশাল এই সমুদ্রকে যদি কাজে লাগানো যায় তবে খাদ্যের পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্যজীবি চাষিদের বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে শৈবাল চাষ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারবে। তাছাড়া এ চাষের মাধ্যমে ওইসব অঞ্চলের নারী-পুরুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।

সমুদ্র উপকুলে সারগাসামের স্তুপ

সমুদ্র উপকুলে সারগাসামের স্তুপ

বাংলাদেশ কোস্ট ট্রাস্টের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে বছরে প্রায় দুই হাজার টন শৈবাল পাচার হয়। অথচ বৈধ পথে এ শৈবাল বিদেশে রফতানি করা হলে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হতো।পরিকল্পিতভাবে শৈবাল চাষ করা হলে সামুদ্রিক এলাকাজুড়ে বিশাল মৎস্যভান্ডার গড়ে তোলা সম্ভব। কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে সামুদ্রিক শৈবাল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,ডেনমার্ক, ফ্রান্স, ব্রাজিল, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, হংকং, মিয়ানমারসহ পৃথিবীর অনেকদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। যা দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করতে পারে।গবেষকদের উচিত বাংলাদেশের প্রাকৃতিক অবস্থা বিবেচনা করে লাভজনক শৈবাল চাষের পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করা। যেন তা মৎস্য সেক্টরে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

★সতর্ক বার্তাঃ হার্বাল ঔষধ সহ যে কোন ঔষধ একমাত্র qualified practioner এর পরামর্শ নিয়ে সেবন করা উচিৎ। সব ঔষধের নির্দিস্ট সেবন মাত্রা ও চিকিৎসার সময়কাল আছে যা সঠিকভাবে মেনে চলা উচিৎ। সুতরাং অনুগ্রহ করে আমার প্রদত্ব তথ্যের ভিত্তিতে কেউ নিজ দায়িত্বে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা করা থেকে বিরত থাকুন।

ছবি: গুগলের সৌজন্যে।

The post সামুদ্রিক আগাছা Sargassum appeared first on NSSB.

ফুলের বংশ পরিচয়

$
0
0

বিয়ে-শাদি বলে কথা! আর যাই হোক এটা নিয়ে তো অবহেলা করা যায় না! তাইতো গুরুত্বের সাথে প্রাধান্য দেয়া হয় বংশ পরিচয় উপাধি পদবী ইত্যাকার বিষয় গুলোকে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পদবীর সাথে জড়িয়ে আছে জমি ও হিসাব সংক্রান্ত ব্যাপার অথবা কোন আঞ্চলিক ব্যাপার। আসলে এই সব পদবী যেমন মানুষের পরিচয় ও মর্যাদাকে নিয়ন্ত্রণ করে ঠিক তেমনি উদ্ভিদের বংশ পরিচয় এদের চাহিদা ও মর্যাদাকেও নিয়ন্ত্রণ করে । যেমন গোলাপ-ধুতরা এ দু’এর মর্যাদা ও চাহিদা কখনোই এক হবার নয়। যদিও উদ্ভিদের পাতা ফুল ফলে ভিন্নতা দেখা যায় তবে কিছু উদ্ভিদের গঠন ও ফুলের রঙ কাছাকাছি হওয়ায় আমরা এদের আসল বংশ পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ি।

কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়া কনকচূড়া লাল সোনাইল

গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে প্রকৃতিতে আগুন লাগিয়ে আবার কখনো গোলাপী হলুদ বসনায় সড়ক দ্বীপে বা বড় বড় উদ্যানে উচ্ছলতা নিয়ে যে রূপসীরা আপনার আমার প্রতিক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে আমি তাদের কথাই বলছি। প্রতিদিন যাত্রা পথে এরা আপনাকে দেখে মুচকি হাসি দিয়ে প্রেম নিবেদন করে আর প্রকৃতি প্রেমীরা সাদরে সেই নিবেদন গ্রহন করে।সৌন্দর্য কে কখনোই ছোঁয়া যায় না শুধুই উপভোগ করা যায়, কিছু সৌন্দর্য আছে বর্ণনা যায় না। তেমনি কয়েকটি রূপসী তরু কৃঞ্চচূঁড়া,রাধাচূঁড়া,কনকচূঁড়া ও লাল সোনাইল যাদের সাথে দেখা হয় প্রতি গ্রীষ্মের তাপদাহে যা সকলের মন প্রানকে স্নিগ্ধতায় ভরিয়ে তুলতে এ ধরায় নেমে আসে।

কৃঞ্চচূঁড়া Fabaceae পরিবার ভুক্ত পেরিনিয়াল সপুষ্পক বড় আকারের উদ্ভিদ যার পাতা দেখতে অনেকটা ফার্নের মত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Delonix regia Boj. ex Hook
এদের আদিনিবাস মাদাগাস্কার হলেও বর্তমানে আমাদের দেশে উপস্থিতিতে প্রমানিত হয় এরা আমাদের নিজস্ব উদ্ভিদ। অনেকের মনে এর নামকরন নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কৃষ্ণ শব্দের বাংলা আভিধানিক অর্থ হলো কালো তাহলে কেন এই লাল রঙের ফুলটির নাম কৃষ্ণ হলো। এর সঠিক উত্তর জানা না থাকলেও হিন্দু ধর্ম মতে, কৃষ্ণচুঁড়া গাছ শ্রীকৃষ্ণ লাগিয়েছিলেন। হিন্দু দেবতা কৃষ্ণ এই ফুল তার খোঁপায় পড়তেন বলেই তরুপ্রেমীরা এই ফুলের নামকরন করেছেন কৃষ্ণচূঁড়া। এ ছাড়াও এটি কোন কোন অঞ্চলে গুলমোহর নামে পরিচিত।

রাধাচূঁড়া মাঝারি আকারের গুল্ম জাতিয় পেরিনিয়াল সপুষ্পক উদ্ভিদ সাধারনত সারা বছরই কখনো হলুদ কখনো লাল কখনোবা লাল হলুদের মিশ্রনে এদের পুষ্পায়ন ঘটে। এর আদি নিবাস ক্রিস গেইলের দেশ ওয়েস্ট-ইন্ডিস তবে এখন আমাদের দেশের সর্বত্র বিরাজমান। এর নাম নিয়েও অনেকের মতে ভিন্নতা আছে তবে সাধারনত সবচেয়ে প্রচলিত হলো হিন্দু দেবতা রাধা এই হলুদ ফুলটি খোঁপায় পড়তেন বলেই এর নাম রাধাচুঁড়া হয়েছে। এটি Febaceae পরিবার ভুক্ত উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম Caesalpinia pulcherrima.

কনকচূঁড়া অনেক বড় আকারের সপুষ্পক পেরিনিয়াল উদ্ভিদ শোভাবর্ধক হিসেবে রাস্তার পাশে ও উদ্যানে রোপন করা হয়। এই উদ্ভিদের আদিনিবাস শ্রীলংকায় হলেও আমাদের দেশে শোভাবর্ধনের দায়িত্বে আছে বহু বছর ধরে। এদের পাতা যৌগিক,গাছ ও পাতার আকৃতি কৃষ্ণচূঁড়ার মতোই। তবে কনকচূঁড়ার শীতের শেষভাগে পাতা ঝরে যায়। গ্রীষ্মে নতুন কচি পাতা আর ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। ফুলে পাপড়ির সংখ্যা পাঁচটি ও পাপড়িগুলো কুঞ্চিত। হলুদ ফুল ফোটে শাখার ডগার লম্বা মঞ্জরিতে। এটিও Febaceae পরিবার ভুক্ত উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম Peltophorum pterocarpum (DC.) K. Heyne. এই ফুলের রঙ সোনালী হলুদ বর্ণের তাই প্রফেসর দ্বিজেন শর্মা এর নামকরন করেছেন কনকচূঁড়া (কনক মানে সোনা)। এছাড়া অনেকের কাছে এটি স্বর্নচূঁড়া বা হলুদচূঁড়া নামেও পরিচিত।

লাল সোনাইল একে বর্ণনা করে শেষ করা দুরুহ ব্যাপার।বসন্তে সব পাতা ঝড়িয়ে কংকালের মত নিস্প্রভ দাঁড়িয়ে থাকা এই বৃক্ষে গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল ফুটে যা বিশালাকার ক্যানপি নিয়ে ফুলে ফুলে যখন প্রকৃতিকে সাজিয়ে দেয় তখন একটি কথাই মনে পড়ে এই রুক্ষ কাস্টল বৃক্ষের হৃদয়ে এত বৈভব কিভাবে লুকায়িত ছিলো!! যখন সম্পুর্ন পুষ্পায়ন ঘটে তখন গাছের ডাল ও পাতা দেখা যায় না শুধুই ফুল আর ফুল মনে হয় যেন প্রকৃতি গোলাপী লিপস্টিক মেখে সেজেগুজে প্রিয়জনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।
লাল সোনাইল Fabaceae পরিবার ভুক্ত উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম Cassia javanica L.এর আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্বএশিয়া।কিন্তু বাংলাদেশেসহ আজকাল সারা
পৃথিবীর উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে বাগানের শোভাবর্ধক উদ্ভিদ হিসেবে রোপন করা হয়। এদের গোলাপি এবং গাঢ় লাল রঙের ফুলের সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে প্রফেসর দ্বিজেন শর্মা নামকরন করেন লাল সোনাইল।

বর্ণিত ৪টি ফুলই Febaceae পরিবারের। সুতরাং এরা একই বংশের চাচাতো, মামাতো, খালাতো ভাইবোন। এখানে যদি কৃঞ্চচূঁড়াকে ভাই ধরা হয় তাহলে রাধাচূঁড়া তার বোন আর কনকচূঁড়া ও লাল সোনাইল যথাক্রমে তার মামাতো চাচাতো ভাই অথবা বোন। যদিও কাজিন রা একই বংশের তথাপি তাদের আচার আচরণ, চুলের ধরন, চোখের রঙ, গায়ের রঙে ভিন্নতা থাকবেই। সুতরাং একজনের সাথে আরেক জনের(উদ্ভিদ বা প্রানী) কিছু না কিছু হলেও বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হবে এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।

The post ফুলের বংশ পরিচয় appeared first on NSSB.

Viewing all 364 articles
Browse latest View live