Quantcast
Channel: NSSB
Viewing all articles
Browse latest Browse all 364

বাগেরহাটে খানজাহান আলীর দীঘির কুমির ফের ডিম পেড়েছে

$
0
0

22 April, 2016

22.04.16 n-3

বাবুল সরদার, বাগেরহাট
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খানজাহান আলী (রহ.) মাজারের দীঘির মিঠা পানির কুমির আবারও ডিম দিয়েছে। প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা ফুটবে এমনটাই আশা করছে মাজারের খাদেম ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ। গত বছর স্থানীয় প্রশাসন মিঠা পানির কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফোটানোর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে (ইনকিউবেটর) চেষ্টা করা হয়। তবে সে উদ্যোগ সফল হয়নি।
বৃহস্পতিবার মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির জানান, এবার মাজারের দীঘির দক্ষিণ পাড়ের একটি বাড়ির ভিটায় কুমির পনেরো দিন আগে প্রায় ৪০-৪৫টি ডিম পাড়ে। ডিম পাড়ার পর খাদেমরা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে যাতে ডিমগুলোতে তা দিতে কুমিরের কোন সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে ওই স্থানটি ঘিরে রাখে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে। তবে খাদেমরা আশাবাদী এবার প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটবে।
দর্শনার্থীরা দীঘিরপাড়ে কুমির দেখে আনন্দিত। অনেকেই কুমির দেখতে ভিড় করছেন।
মিঠা পানির কুমিরের বিলুপ্তি ঠেকাতে ২০০৫ সালে ভারতের মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্ক থেকে ছয়টি কুমির এনে এই মাজারের দীঘিতে ছাড়া হয়। মাদ্রাজের থেকে এনে ছাড়া ওই কুমিরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মারামারিতে কালাপাহাড় গুরুতর আহত হয়। এর কিছুদিন পর কালাপাহাড় মারা যায়। এরপর খানজাহান আলীর হাতে ছাড়া ধলাপাহাড় অবশিষ্ট থাকে। সেটিও ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মারা যায়।
বাগেরহাট খানজাহান আলী (রহ:) মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বলেন, ২০০৫ সালে মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাঙ্ক থেকে এনে ছাড়া মিঠা পানির কুমির গত কয়েক বছর ধরে ডিম দিলেও তাতে নতুন করে কোন বাচ্চা ফুটছে না।
গত বছর এই দীঘিতে মিঠা পানির কুমির রক্ষায় জেলা প্রশাসন কুমিরের ডিম সংগ্রহ করে তা দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফোটানোর উদ্যোগ নেয়। আর এই কৃত্রিম উপায়ে ডিম ফোটানোর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি (ইনকিউবেটর) দিয়ে সহযোগিতা করেছিল বেসরকারী সংস্থা এসিআই। কিন্তু সে উদ্যোগ সফল হয়নি। এবার আশা করছি প্রাকৃতিকভাবে বাচ্চা ফুটবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে আমরা এগোচ্ছি।
বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুখেন্দু শেখর গায়েন জানান, গত বছর মাজারের দীঘির একটি কুমির ৫৫ ডিম পাড়ে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের একটি বিশেষজ্ঞ দল সেখানে গিয়ে ২২টি ডিম সংগ্রহ করে তা দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে বাচ্চা ফোটাতে ইনকিউবেটর বসানো হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা না ফোটায় এবার প্রাকৃতিক উপায়ে বাচ্চা ফোটার জন্য সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
ইতিহাস অনুযায়ী, হযরত খানজাহান আলী (রহ:) সুলতানী শাসন আমলে খ্রিস্টীয় ১৪ শতকের প্রথম দিকে বাগেরহাটে খলিফাবাদ নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি ঠাকুর দীঘি নামে পরিচিত এই দীঘিটি সংস্কার করেন। তিনি এই দীঘিতে ‘কালা পাহাড়’ ও ‘ধলা পাহাড়’ নামে মিঠা পানির এক জোড়া কুমির পোষেন। তিনি তাদের নিয়মিত খাবার দিতেন, কুমির দুটি তাঁর হাত থেকে খাবার খেত। তাঁর মৃত্যুর পর মাজারের খাদেম ও ভক্তরা এই কুমির দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতেন। ক্রমে এই কুমির যুগল বংশ বিস্তার করে এবং গত সাত শ’ বছর ধরে বংশানুক্রমে তারা এই দীঘিতে উন্মুক্ত পরিবেশে বসবাস করে আসছিল। এক সময়ে এই কুমির হযরত খানজাহান ভক্ত-অনুরাগীদের বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রতীকে পরিণত হয়। এরা হয়ে ওঠে এই মাজার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মাজারের এই কুমির নিয়ে এলাকার মানুষের মুখে অনেক কিংবদন্তি ও লোককাহিনী শোনা যায়।
Source: https://www.dailyjanakantha.com/details/article/186631
Photo Source: https://www.dailyjanakantha.com

The post বাগেরহাটে খানজাহান আলীর দীঘির কুমির ফের ডিম পেড়েছে appeared first on NSSB.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 364

Trending Articles